দীর্ঘকালীন কোভিড পরিস্থিতিতে ঘরবন্দী থাকার পর এবার কিছুটা হলেও স্বস্তিতে বাইরে বার হতে পেরেছেন মানুষজন। গতবারের তুলনায় এবার দক্ষিণ ও পূর্ব কলকাতায় ভিড় অনেকটাই বেশি, ঠিক তার বিপরীতে নজর টানছে পরিবেশ সচেতনতামূলক থিম।

বেশ কিছু বড় পূজোই এবার প্রকৃতি ও পরিবেশ নিয়ে সরব হয়ে উঠেছে যার প্রভাব পড়েছে তাদের পূজোর থিমে। এর মধ্যে শীর্ষ তালিকায় অবশ্যই রাখতে হবে ‘হিন্দুস্থান ক্লাব পূর্বাচল সার্বজনীন’-কে। সমসময়ের কোভিড পরিস্থিতি এবং ডাক্তার ও মেডিকিল টিমের সক্রিয় ভূমিকার জীবন্ত চিত্র ফুটে উঠেছে এই ক্লাবের পূজোয়। এই মন্ডপের ভেতরে প্রবেশে কোনোরকম বিধি নিষেধ রাখা হয়নি, এর সম্ভাব্য কারণ আপনারা ভেতরে গেলেই অনুভব করবেন। করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষারত চিকিৎসকের বিরাট আউটকাটিং- এর প্রবেশপথ পার করে মন্ডপের ভেতরে গেলেই সকলে সচেতন হয়ে উঠবেন নিজে থেকেই। গড়িয়াহাট চত্বরের অন্যান্য পূজো দেখার পাশাপাশি এই থিমপূজোটি অবশ্যই দর্শনীয়।

এছাড়াও ‘রাজডাঙ্গা নব উদয় সংঘ’ ও ‘বোসপুকুর শীতলা মন্দিরের’ পূজোথিমেও ধরা দিয়েছে অনন্যতা। নব উদয়ের পূজোয় বাঁশবাখারি দিয়ে তৈরি কারুকার্যে ফুটে উঠেছে জীবনযাপনের মিলিত কোলাজ।

বোসপুকুর শীতলা মন্দিরের পূজো সর্বপ্রথম বিখ্যাত হয়েছিল ভাঁড়ের তৈরি মন্ডপ দিয়ে। তারপর থেকেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে প্রচুর মানুষ ছুটে আসেন এই পুজো দেখতে। সেই বোসপুকুর শীতলা মন্দিরের এবারকার পূজো থিম– ‘টান’। এই টান আসলে নিঃশ্বাস প্রশ্বাসকেই বোঝাচ্ছে। ক্ষতিকারক মাদক দ্রব্য থেকে ফুসফুসকে রক্ষা করতেই মন্ডপের শীর্ষে তৈরি করা হয়েছে ফুসফুস। গাঁজার কল্কের ওপর চিত্রিত কর্কট (ক্যান্সার) হয়ে উঠেছে নেশা বিরোধের প্রতীকী।

তবে বেশিরভাগ বড় পূজোর মতোই এই দুটি পূজোমন্ডপের ভেতরে প্রবেশ করা এবং ভিড় জমিয়ে বেশিক্ষণ দাঁড়ানো যাবেনা। এবিষয়ে সদাসতর্ক পুলিশ ভলান্টিয়াররা।
এবারের বেশকিছু দুর্গাপূজো মাস্ক পরিহিত মানুষের ভিড়কে তাদের পূজো থিমের মাধ্যমেই বারবারই মনে করিয়ে দিচ্ছে গাছ, অক্সিজেন, প্রকৃতি ও পরস্পরকে বাঁচানোর বার্তা।
