সারা দেশে বিজেপি বিরোধী জোটের আহ্বান জানাতে সম্প্রতি মুম্বই গিয়ে শিবসেনা ও এনসিপি নেতৃত্বের সাথে দেখা করেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখানে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের সাথে বৈঠক সেরে দুজনে একসাথেই সাংবাদিক সম্মেলনে অংশ নেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বিভ্রান্তিবশত মমতা বলে বসেন, “ইউপিএ কোথায়?”

বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যে ঝড় ওঠে রাজনৈতিক মহলে। কংগ্রেসের প্রতি এই মন্তব্য অপমানজনক বলেই একাংশ মনে করেছেন। যদিও বিজেপি বিরোধী বিকল্প শক্তি তৈরিতে কংগ্রেসের একের পর এক ব্যর্থতার প্রসঙ্গ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই তুলেছিলেন। বলেছিলেন, কংগ্রেস সঙ্গী না হলে তৃণমূল একলা চলো নীতি মেনেই এগোবে। সেক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই সবচেয়ে শক্তিশামী মুখ হিসেবে এককথায় মেনেই নিয়েছেন দেশের প্রায় সমস্ত আঞ্চলিক দল। তবে জোট প্রসঙ্গে শিবসেনা পরিস্কার তাদের মতামত জানিয়ে বলে দিল, “কংগ্রেসকে ছাড়া বিজেপি বিরোধী জোট সম্ভব নয়। তাতে বিজেপিই ফায়দা লুটতে পারে।”
এদিন মুম্বইয়ে উদ্ধব ঠাকরের সঙ্গে দেখা না হলেও, তাঁর পুত্র আদিত্য ঠাকরে ও দলনেতা সঞ্জয় রাউত শিবসেনার পক্ষ থেকে মমতার সাথে বৈঠক করেন। আর তারপরেই শিবসেনার দলীয় নেতা সঞ্জয় রাউত জানান, “ইউপিএ কোথায়? মমতার এই প্রশ্ন হয়তো সংগত। তবে ইউপিএর পরিবর্তে যতগুলি বিকল্প গঠন করা হয়েছে, পক্ষান্তরে তার দ্বারা বিজেপিরই ফায়দা হয়েছে।” কংগ্রেস নেতা সঞ্জয় নিরুপম প্রশ্ন রেখেছেন, “যে ইউপিএ আগে থেকেই অবস্থান করছে, আমরা তাকেই কেন শক্তিশালী করার কথা ভাববোনা?”

সেই বক্তব্য কিছুটা সমর্থন করেই শিবসেনার দলীয় মুখপত্র ‘সামনা’-য় লিখিত বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, “যাঁরা কংগ্রেসহীন ইউপিএ চাইছেন তাঁরা পিছনে থেকে বিভ্রান্তি না বাড়িয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করুন। যদি সর্বসম্মতি না থাকে তাহলে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কথা না বলাই ভালো। কেননা নেতৃত্ব মূল ইস্যু নয়, বিজেপিকে হারাতে হলে একসূত্রে এক মঞ্চে আসতে হবে।”
কংগ্রেস প্রসঙ্গে শিবসেনার মুখপত্রে আরো লেখা হয়েছে, “বিজেপির একটাই অ্যাজেন্ডা ছিল কংগ্রেসকে হারাতে হবে। যাঁরা বিজেপি ও মোদীর বিরুদ্ধে, আবার কংগ্রেসেরও ক্ষতি চাইছে, এমন হলে চিন্তার কারণ।”
অর্থাৎ বিজেপি বিরোধী জোটে কংগ্রেসকে রাখতেই হবে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছে শিবসেনা।
তবে শিবসেনার এই বক্তব্যের প্রত্যুত্তরে তৃণমূলের রাজ্যসম্পাদক ইতিমধ্যে ট্যুইট করে বলেছেন, “তৃণমূল কখনই কংগ্রেসকে বাদ রাখার কথা বলেনি। বিজেপি বিরোধী জোট শক্ত করতে কিছু প্রস্তাব দিয়েছে। কংগ্রেস এখনও নীরব। তৃণমূল হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। মানুষ যেখানে চাইছেন, আমরা সাধ্যমত দল বিস্তার করব। বাকিটা পরে শীর্ষ নেতৃত্ব যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।”