মুদ্রাস্ফীতি। শব্দটি শুনতে সাধারণ মনে হলেও আর্থিক আদানপ্রদান এবং একটি দেশের ক্রেতা-বিক্রতার কাছে ওই শব্দটা গুরুত্বপূর্ণ অর্থ বহন করে থাকে। আমাদের দেশ শুধু নয়, এই মূহুর্তে ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতির কারণে চরম দারিদ্র্যের শিকার হচ্ছে আমাদের প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তান। সেদেশে পুরোনো ব্যবহৃত অর্থাৎ সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড়ের বিক্রীর পরিমাণ বেড়ে যাওয়াই তার প্রমাণ।
শুক্রবার ‘আরব নিউজ’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এই তথ্য উঠে এসেছে, যার পরিসংখ্যান জানলে সাধারণ মানুষের চোখ কপালে উঠবে।

পাকিস্তান স্ট্যাটিস্টিকস অনুযায়ী গত আর্থিক বছরে সেকেন্ড হ্যান্ড জামাকাপড়ের আমদানি বেড়ে গেছে ৯০ শতাংশ। জামাকাপড় আমদানির পরিমাণ সংখ্যা ৩২,৬২৩ মেট্রিক টন। যার দাম ৩০৯.৫৬ মিলিয়ন ডলার, আগের বছরের তুলনায় এই দাম প্রায় ৮৩.৪৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি আর্থিক বছরের শুধুমাত্র প্রথম দুই মাসেই পাকিস্তান আমদানি করেছে ১,৮৩,২৯৯ মেট্রিক টন ব্যবহৃত পুরোনো জামাকাপড়! অর্থনীতির হিসাবে পাকিস্তানে এই বছরে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ৯ শতাংশ।
পাকিস্তানের ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠছে। নতুন পোশাক কেনার ক্ষমতা যে সেখানকার সেখানকার সাধারণ জণগণের নেই, এই রিপোর্টই তার প্রমাণ।
মুদ্রাস্ফীতি কীভাবে অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে?
মুদ্রাস্ফীতি উৎপাদিত দ্রব্যের দাম ক্রমাগত বৃদ্ধি করে। খুব সহজে বললে মুদ্রাস্ফীতির কারণে টাকার মূল্য কমে যায়। অর্থাৎ যে পরিমাণ জিনিস আপনি এই বছর কিনছেন, পরের বছর একই মূল্যে তার থেকে কম পরিমাণ জিনিস কিনতে পারবেন।

এর দুরকম প্রভাব পড়তে পারে। এক, যাদের হাতে প্রচুর টাকা তারা দ্রব্য কিনে তা খরচ করে ফেলতে অতি উৎসাহিত, আর যাদের আয় কম তারা চাইলেও সেই দ্রব্য কিনতে অক্ষম।সুতরাং মুদ্রাস্ফীতির সাথে তাল রেখে আয় না বাড়লে এক বিপুল সংখ্যক সমষ্টির দরিদ্রতা আসতে বাধ্য।
প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তানের সাধারণ ক্রেতা এই মূহুর্তে মুদ্রাস্ফীতির কারণে তীব্র সংকটে।
পাকিস্তানের সেকেন্ড হ্যান্ড ক্লথিং মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মহম্মদ উসমান ফারুকী সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, “দেশে মূল্যস্ফীতির কারণে সেকেন্ড হ্যান্ড কাপড়ের ব্যবহার বাড়ছে।…যারা আগে ব্যবহার করতেননা, তারাও এখন ব্যবহৃত পোশাকের বাজারের দিকে ঝুঁকছেন”।
পাকিস্তান ইনস্টিটিউট অফ ইকোনমিকস-এর তথ্য অনুযায়ী এ মূহুর্তে পাকিস্তানের ৩৯ শতাংশ মানুষ দরিদ্র। সংখ্যাটা রীতিমতো ভাবায়।