ত্রিপুরায় খাতা খোলার সাথে সাথেই পরবর্তী রণকৌশল নির্ধারণ শুরু করে দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ এক দলীয় কর্মীসভার আলোচনার কথা। সেখানে ত্রিপুরার দায়িত্বপদ নিয়ে প্রসঙ্গ তো উঠবেই; অনেকের অনুমান, ত্রিপুরার দায়িত্ব কাঁধে নিতে চলেছেন অশোক তানওয়ার। কিন্তু এই নামের সম্ভাবনাই উঠে আসছে কেন? তার জন্য হরিয়ানার এই রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের নেপথ্য কাহিনীতে একবার চোখ বুলিয়ে নিতে হবে।

জওহরলাল নেহেরু ইউনিভার্সিটির এই প্রাক্তনী কংগ্রেসে রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বলে একটা সময় পরিচিত ছিলেন। গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠ অশোক একইসঙ্গে সামলেছেন কংগ্রেসের যুব সংগঠনের সভাপতির পদ এবং পাশাপাশি হরিয়ানার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ।
২০০৯-এর লোকসভা নির্বাচনে সিরসা কেন্দ্র থেকে জিতলেও, পরের দুবার হেরে যান। আর তার কিছুদিনের মধ্যেই ভূপেন্দ্র সিং হুডার সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে ২০১৯ এ কংগ্রেস ত্যাগ করেন। এরপরই কংগ্রেস ছেড়ে ত্রিপুরার প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি তথা ত্রিপুরার মহারাজা প্রদ্যোত দেববর্মণের সাথে মিলিত হয়ে প্রদ্যোতের সংগঠন ‘তিপ্রা মথা’-য় অংশ নেন। পরে প্রদ্যোত দেববর্মণেরই উৎসাহ ও পৃষ্ঠপোষকতায় দিল্লীতে নিজস্ব দল ‘আপনা ভারত’ গঠনের দিকে অগ্রসর হয়েছিলেন অশোক তানওয়ার। মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লী সফরে এই অশোক তানওয়ার যোগ দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
উল্লেখ্য, প্রদ্যোতের দল ‘তিপ্রা মথা’ ত্রিপুরার স্বয়ংশাসিত উপজাতি পরিষদের নির্বাচনে বিজেপিওএবং আইএফটি জোটকে বিপুল ভোটে পরাস্ত করে। সুতরাং অশোক তানওয়ারের ঘনিষ্ঠ সঙ্গী প্রদ্যোত দেববর্মণের সাথেও যদি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হাত মেলান, ভবিষ্যতে বিজেপির পিঠ দেয়ালে ঠেকে যাবেই। কারণ ত্রিপুরার মোট ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রের অধিকাংশই উপজাতি পরিষদের দখলে।

এবারের পুরভোটে তৃণমূলের পাশাপাশি প্রদ্যোতের সংগঠন ‘তিপ্রা মথা ‘ ১ টি আসনে জিতেছে। ত্রিপুরার ভবিষ্যত রাজনৈতিক মঞ্চে এই রসায়ন বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারে বলেই রাজনৈতিক মহলের অনেকে মনে করছেন। তাই কি ত্রিপুরা নিয়ে এতটা আত্মবিশ্বাসী তৃণমূল কংগ্রেস? অদূর ভবিষ্যতেই সেটা দেখতে পাওয়া যাবে।