দলে ভাঙন ধরেছে আগেই। স্বার্থের খাতিরে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নেতাকর্মীরা হাওয়ার বেগতিক বুঝে পেছনদরজা দিয়ে পালাতে শুরু করেছেন চাক বেঁধে। কেউ নিরপেক্ষ সেজে মাথা ঘুরে চিৎপটাং, কেউ আবার ‘মা! মা’ বলে কাঁদতে কাঁদতে ফেরত যাচ্ছেন তৃণমূলে। কেউ আবার সোজাসাপটা ‘গিভ অ্যান্ড টেক’ পলিসি ঝেড়েছেন প্রকাশ্যেই বুক ঠুকে। এতে যে বিজেপির প্রচুর ক্ষতি হয়েছে সন্দেহ নেই। বৃদ্ধ পিতামহ ভীষ্মের মতো ‘তথাগত বাণী’ উপেক্ষা করার ফল হাতেনাতে টের পাচ্ছে বিজেপি শিবির। কোচবিহারের দিনহাটাতেও সেই এক ছবি।
প্রথম দিন ভোটপ্রচারে বেরিয়েই বিরুদ্ধ পরিবেশ তৈরি হল বিজেপি প্রার্থীকে কেন্দ্র করে। দিনহাটার বিজেপি প্রার্থী অশোক মন্ডল প্রচারে বার হতেই কিছু লোক ‘গো ব্যাক ‘ শ্লোগান তোলা শুরু করে দেয়। প্রাথমিক ভাবে এদের তৃণমূলী বলেই চিহ্নিত করেছে স্থানীয় বিজেপি দল।

দিনহাটা বিধানসভার বামনহাট এলাকায় প্রার্থীকে নিয়ে প্রচার চলছিল রাস্তায়। বেশ কিছু কর্মী ছাড়াও প্রার্থীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিজেপি নেতা মিহির গোস্বামী। এলাকার মানুষের কাছে গিয়ে “আমি অশোক মন্ডল, পদ্মফুল চিহ্নে ভোট দেবেন ” বলতেই রে রে করে শ্লোগান ওঠে “অশোক মন্ডল গো ব্যাক!” এমনই অভিযোগ অশোক মন্ডল ও মিহির গোস্বামীর। তাঁরা জানিয়েছেন এরপরই তৃণমূলের পতাকাধারী কিছু লোক তাঁদের ধাওয়া করে। বাধা দেওয়ায় বাদানুবাদ থেকে ধাক্কাধাক্কিও শুরু হয়ে যায়।
বিজেপি প্রার্থী অশোক মন্ডল দুঃখের সঙ্গে জানালেন, “আজ প্রচারে বেরিয়ে যে অভিজ্ঞতা হল, গত চল্লিশ বছরের রাজনৈতিক জীবনে তা হয়নি”।
নাটাবাড়ির প্রভাবশালী বিজেপি নেতা মিহির গোস্বামী জানিয়েছেন, “যেভাবে আমার ও অশোকের ওপর ওরা নির্যাতন করল, এর বিরুদ্ধে আমরা নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানাবো”। একই সঙ্গে তিনি দাবি জানান, “এখানে নির্বাচন করতে হলে ১০০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে দিয়ে নির্বাচন করাতে হবে ও ভোটের আগে এরিয়া ডমিনেশন করাতে হবে”।
উল্লেখ্য, এর আগেই দিনহাটা ২ নম্বর ব্লকের ২৬৩ পরিবার ও প্রচুর নেতাকর্মী সহ বিজেপির কোচবিহার জেলা সম্পাদক সুদেব কর্মকার তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তার ওপর আবার মিহির গোস্বামীর অভিযোগ — ফরোয়ার্ড ব্লকের নেতা কর্মীকেও দল ভাঙিয়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ানো চলছে।

সুতরাং কোচবিহারের দিনহাটায় যে তৃণমূলেরই হাওয়া বইছে তাতে সন্দেহ নেই। রাজনীতির বদলে যাওয়া গ্রাফ সেই কথাই বলছে।