নিজেকে এবার রবীন্দ্রনাথের সঙ্গেই তুলনা করে বসলেন মদন মিত্র। সম্প্রতি এক জনপ্রিয় সংবাদমাধ্যমে খোলামেলা সাক্ষাৎকারে খোলামনে নিজেকে মেলে ধরলেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক ।
দিদির প্রিয় ‘কালারফুল’ মদনের যে জনপ্রিয়তা আছে সন্দেহ নেই। চোখে সানগ্লাস চাপিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ ভিডিওতে এসে চটকদার কান্ডকীর্তি করে মাঝে মাঝেই সকলকে চমকে দেন। দিলদরিয়া খোশমেজাজি মদন মিত্রকে নিয়ে সিনেমাও হতে চলেছে। গান গেয়ে মাতিয়ে , মহিলাদের সাথে সিঁদুর খেলে জনতার প্রিয় মদন মিত্রর মেজাজ এমন তুঙ্গে যে,নিজের সাথে রবীন্দ্রনাথের তুলনা করতেও ছাড়লেননা!

সাক্ষাৎকারে তিনি নিজের সম্পর্কে বলতে গিয়ে বলেন, “আমি মন্ত্রী নই, হয়তো এক লক্ষ ভোটে জিততে পারিনি, কিন্তু মানুষের কাছে যা ভালোবাসা পেয়েছি তা আমার থেকে রবীন্দ্রনাথ বেশি পেয়েছিল বলে মনে করিনা। তখন জনসংখ্যাও কম ছিল। রবীন্দ্রনাথ লক্ষ ভালোবাসা পেলে আমি কোটি ভালোবাসা পেয়েছি”।
অবশ্য এটুকু বলেই থামেননি মদন মিত্র। জনপ্রিয়তার পাশাপাশি তাঁকে ঘিরে যে এত বিতর্ক সেই সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলেও অনুপ্রেরণা স্বরূপ রবীন্দ্রনাথকে টেনে আনলেন। পরিস্কার বললেন, “বিতর্কের কিছু নেই। অনেকেই জানতে চায় পরে দলে যোগ দিয়ে অনেকেই। বড় বড় পদ পেয়ে যাচ্ছে, তা নিয়ে আমার কোনও ক্ষোভ নেই। আমি তাদের বলি, রবীন্দ্রনাথের ১০০ বছর আগে থেকে লোকে কবিতা লেখে, তাদের আগে রবীন্দ্রনাথ নোবেল পেয়েছিলেন। তাতে কি! এগুলো কোনো ব্যাপার নয়”।
এরপরই ওই সাক্ষাৎকারে নিজের প্রেম বিয়ে নিয়ে কথা বলতে বলতে নিজের জনপ্রিয় সানগ্লাস রহস্যও প্রকাশ করে দিয়েছেন বাঙালির নব্য রবীন্দ্রনাথ। তিনি জানালেন, “আমার চোখ দেখলে লোক বুঝে ফেলবে কী বলতে চাই। কিন্তু আমি যদি হালকা আবরণে থাকি, তাহলে বুঝতে পারি কে কে লক্ষ্য করছে আর কে করছেনা “।

তাহলে এতদিনে জানা গেল জীবন্ত কিংবদন্তী মদন মিত্রর চোখে সবসময় সানগ্লাস থাকার কারণ। আসলে কে তাঁকে লক্ষ্য করছে সেটা লক্ষ্য করার জন্যই তিনি সানগ্লাস পরে থাকেন — নিজেই বললেন তিনি।
“মূহুর্তে মূহুর্তে প্রেমে পরা” প্রেমিক মদন মদন মিত্র জানিয়েছেন “ইন্সটাগ্রামে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী ৫৪ শতাংশ ফলোয়ারদের মধ্যে ৪৮ শতাংশই মহিলা”। সুতরাং প্রেমে পড়া ঠেকায় কে?

উত্তর কলকাতার রকের আড্ডা আর বসন্ত কেবিনের দিলখুশার স্মৃতি রোমন্থন করে নস্ট্যালজিক হয়ে গিয়ে প্রায় বেহুঁশ হয়ে পড়তে বাকি রেখেছেন তৃণমূলের এই জনপ্রিয় নেতা। দুর্গাপূজোর মরসুমে মন খুলে দুর্গার কাছে প্রার্থনা করে বসলেন, “মা পরেরবার দোলা, গজ এসব কিচ্ছু দরদকার নেই, আমরা তোমায় সোনার ডালায় করে নিয়ে আসব, তুমি সত্যিকারের মমতাকে কাজ করতে দাও”।
“সত্যিকারের মমতা!” মানে খুঁজে মাথা চুলকোচ্ছেন রাজনৈতিক মহলের অনেকেই, তাঁদের জ্ঞাতার্থে জানানো হচ্ছে এই শব্দবন্ধের মাধ্যমে সম্ভবত উনি সত্যিকারের দুর্গার সাথেই মমতার তুলনা করতে চেয়েছেন।
এরপরই মদন মিত্র এক অমোঘ ভবিষ্যৎবাণী করেছেন ইতিহাস যা চিরকাল মনে রাখবে। মদন মিত্র ঘোষণা করেছেন, ” ২০২০-২১ তো অনেক কষ্টে কাটালাম। আমার মনে হয় ২০২২-এ রেনেসাঁ আসছে”।
মদন মিত্র যদি রবীন্দ্রনাথ হন, তবে সত্যিই যে রেনেসাঁ আসছে তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আপাতত সমগ্র বঙ্গবাসী তাঁর বায়োপিক দেখার অপেক্ষায়।