বিজেপির নতুন নিযুক্ত রাজ্যসভাপতি সুকান্ত মজুমদারের এই তো প্রথম ময়দানে নামা। অগ্রজের মতোই তাঁকে সবকিছু ঘুরিয়ে দেখিয়ে শেখা-পড়া করিয়ে দিচ্ছেন দিলীপ ঘোষ। কিন্তু ঘুরে দেখতে গিয়ে নিজের দল সম্পর্কে এমন বিষাক্ত অভিজ্ঞতা হল যে, নয়া রাজ্য সভাপতির মাথা ঘুরে যাওয়ার অবস্থা।
শাসক দলের বিরুদ্ধে তর্জন গর্জন আর তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব নিয়ে সমালোচনা করা নব্যকান্তি নেতা সুকান্ত জানতেন না তাঁর দল বিজেপির অভ্যন্তরেও এমন কোন্দল চলছে।

দলের ভিতরে বিভিন্ন সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে অনেকসময়ই দলের উচ্চ নেতৃত্বের ওপর নিচতলার ক্ষোভ বিক্ষোভ জমা হয়ে থাকে। বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর যা বিজেপি দলে চরম আকার ধারণ করেছে। আসলে এই মূহুর্তে দলছুট নেতাদের ঠেকাতেই বিজেপি তৎপর। বিধানসভায় আগে যেসব নেতা তৃণমূল থেকে ভরা জোয়ারের মতোই বিজেপিতে ভেসে এসেছিল, ভোটে হেরে যাবার পর সেইসব নেতারা হড়পা বানের মতোই তৃণমূলে ফিরে যাচ্ছেন।
সম্ভবত সেকারণেই তৃণমূল-ছুট নেতাদের আটকাতেই বিজেপি একটু বেশি নজর দিচ্ছে। আর তাতেই ক্ষুব্ধ দলের আদর্শ পুরোনো কর্মীরা। সম্প্রতি কাটোয়ার এক সভায় তেমনই ক্ষোভ ঝামেলার আকার ধারণ করল।
বৃহস্পতিবার থেকে বীরভূমের জেলাসফর শুরু করেছেন সুকান্ত। সেই উপলক্ষ্যেই কাটোয়ার নেতাজি সুভাষ রোডে এক সভায় যোগ দিতে যাচ্ছিলে দিলীপ ঘোষ ও সুকান্ত মজুমদার। ঠিক এই সময়েই স্থানীয় নেতাদের সাথে কথা কাটাকাটি থেকে বিজেপি কর্মীদের তুমুল ঝগড়া বেধে যায়। নেতারা কর্মীদের উপর চড়াও হয়ে মারধোর শুরু করেন। কিছু কর্মীর সরাসরি অভিযোগ — নেতারা তাদের থেকে তৃণমূলের ছিটকে আসা নেতাদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দিচ্ছেন। এই থেকেই ঝগড়া মারপিটের সূত্র। সভা শুরুর আগেই সভা ভন্ডুল হয়ে যায়।

এই ঝামেলা আর নেতা কর্মীদের চেয়ার ছোঁড়াছুঁড়ির খবর কানে যাওয়ার পর আর ওমুখো হননি সুকান্ত মজুমদার। প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলে ঘাবড়ে গিয়ে আর কিছু বলতে না পেরে, গোটা ব্যাপারটাই তৃণমূলের চক্রান্ত বলে উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, “বিজেপির পতাকা নিয়ে কেউ বিজেপির পার্টি অফিসে ভাঙচুর চালাতে পারেনা। এখানে তৃণমূলের ইন্ধন ছিল”।
সুকান্ত মজুমদারের এই কথায় রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মমতা ব্যানার্জীর একটি পুরোনো মন্তব্যের মিল খুঁজে পেয়েছেন।
কি মন্তব্য আবার? কেন, ওই যে –“সব সিপিএমের চক্রান্ত!”
