কলকাতার পুুরনির্বাচন মেটার পর বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপি নেতারা এই ভোটকে ‘প্রহসন’ বলে উল্লেখ করে বিক্ষোভে নামেন। কলকাতার প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে রাজ্যপালের কাছে ডেপুটেশন জমা দিয়ে বলা হয়, “পুরভোটকে প্রহসনে পরিণত করেছে শাসকদল। আমরা সমস্ত ওয়ার্ডে পুনর্নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে বলব শাসকদলের চাটুকারিতা করে বেশিদূর চলা যাবেনা।”
তবে বিরোধী দল বিজেপির এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে পুনর্নির্বাচনের দাবি খারিজ করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বিরুদ্ধতা করে আজ বিজেপির মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিস থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিল সেন্ট্রাল এভিনিউ ধরে অগ্রসর হওয়া শুরু করতেই পুলিশের সাথে কার্যত বিজেপি কর্মী সমর্থকদের বচসা শুরু হয়ে যায়। পুলিশের ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করলে হাতাহাতি দাঙ্গার চেহারা নেয়।
এদিন সুষ্ঠুভাবে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিলে সামিল হয়ে শুভেন্দু অধিকারী জোরালো দাবি তোলেন, “ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। অবাধে ছাপ্পা, রিগিং হয়েছে। নির্বাচন কমিশন মেরুদন্ডহীন। নির্বাচন কমিশনকে বলছি যদি দম থাকে পুনর্নির্বাচন করুন। সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরি থেকে সিসিটিভি অডিট করা হোক! তৃণমূলের গুন্ডারা আটটা দশটা করে ভোট দিয়েছে। আমার কাছে সমস্ত ফুটেজ রয়েছে। ”
বিজেপির এই দাবি নিয়ে বিক্ষোভ সমাবেশ রণক্ষেত্রের আকার ধারণ করে। পুলিশের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মী এমনকি মহিলাদেরও মারধোরের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। সায়ন্তন বসুর বক্তব্য অনুয়ায়ী, “মিছিল শুরু করার আগেই পুলিশ গ্রেপ্তার করল। চায়ের দোকানের চা খাচ্ছিল।সেখান থেকেই অনেককে তুলে নিয়ে গিয়েছে।” বিজেপির মহিলা কর্মীদের সাথেও দুর্ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
উল্টোদিকে, বিজেপি কর্মীরা জবরদস্তি গার্ডরেল ছিনিয়ে নিয়ে, ব্যারিকেট ভেঙে ধ্বস্তাধস্তি শুরু করেছে বলেই অভিযোগ তুলেছে পুলিশ। রাজ্যের পরিবহনমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, “পুরভোট ওঁরা রাস্তায় নামেননি। কোথাও এজেন্ট দিতে পারেনি বিজেপি। এখন সস্তার রাজনীতি করছে। হয়তো নাড্ডা, অমিত শাহকে সন্তুষ্ট করতে চাইছে বিজেপি নেতৃত্ব।”
অপরপক্ষে, নির্বাচন কমিশন স্পষ্টতই জানিয়ে দিয়েছে, “কলকাতার কোনও বুথেই আর পুনর্নির্বাচন করা হবেনা।”এক্ষেত্রে সিসিক্যামেরা চাপা দেওয়া, ছাপ্পাভোট সহ বিরোধীদের সমস্ত অভিযোগ তদন্ত করে খুঁটিয়ে দেখে তবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও জানান, “দুএকটি বিক্ষিপ্ত অশান্তি ছাড়া উৎসবের মেজাজেই ভোট হয়েছে। ঝামেলায় তৃণমূলের কেউ জড়িত রয়েছে বলে প্রমাণ দেখাতে পারলে, সাথে সাথে ব্যবস্থা নেবে দল। ”
এবার নিজেদের দাবিতে অনড়, বিরোধী দল বিজেপি তাদের দাবি নিয়ে আদালতে যায় কিনা সেটাই এখন দেখার।