‘মোদের গরব মোদের আশা, আ মরি বাংলা ভাষা’। নিজের মাতৃভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দিয়ে বিশ্বের দরবারে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে যে দেশ, সেই বাংলাদেশেই প্রত্যাখ্যাত হল বাংলা ভাষা! প্রত্যাখ্যাত হল স্বয়ং মন্ত্রীর বাংলায় লেখা চেক ! ব্যাঙ্ক কর্মীর এ কেমন অজ্ঞতা?
তবে দুঃখিত হলেও আশার খবর, বাংলাদেশের ‘ভাষা ‘ -র জন্য আরো একবার লড়াই করে প্রাপ্য গৌরব ছিনিয়ে এনে সে দেশেরই উত্তরাধিকার অর্জন করে দেখালেন তিনি। বুঝিয়ে দিলেন বাংলা আছে বাংলাতেই।

২১-শে ফেব্রুয়ারি। যে তারিখটি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে খ্যাত, বাংলাদেশে সে ভাষা মর্যাদা পেয়েছিল অনেক সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে। ভাষা শহীদ আব্দুুল, সালাম জব্বার, বরকতের সেই বাঙালির স্বাধীন দেশেই ‘বাংলাভাষা’ এবার লাঞ্ছনার শিকার হল। বাংলাদেশেের টেলি যোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের বাংলায় লেখা একটি চেক প্রত্যাখ্যান করল একটি ব্যাঙ্ক।
বৃহস্পতিবার, সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের এই খারাপ অভিজ্ঞতা নিজেই জানিয়েছেন তিনি। এমনকি বলেছেন এতটাই মর্মাহত যে তাঁর আত্মহত্যা করতে ইচ্ছে হচ্ছে।

ফেসবুকে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি লেখেন, “মন চাইছে আত্মহত্যা করি। একটি চেকে আমি ডিসেম্বর বাংলায় লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে চেকটি ফেরত দিয়েছে! কোন দেশে আছি?”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তফা জব্বার সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্টটি করার পর নেটমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা শুরু হয়ে যায়।
প্রতিষ্ঠানের সম্মান যাতে ক্ষুন্ন না হয় তাই তিনি ব্যাঙ্কটির নাম উল্লেখ করেননি। শুধু জানান এলিফ্যান্ট রোড শাখার একটি ব্যাঙ্কে এই ঘটনা ঘটেছে।বেয়ারার চেক দিয়ে যাকে তিনি পাঠান, ব্যাঙ্কের কাউন্টার সেই ব্যক্তিকে বাংলা শব্দ লেখার কারণে চেক ফেরত দিয়ে দেয়।
পরে অবশ্য ব্যাঙ্কের সাথে নিজে যোগাযোগ করে বাংলার উপযুক্ত মর্যাদা ফিরিয়ে আনেন। নিজেই আরেকটি পোস্টে সেকথা জানিয়ে লিখেছেন, “আজ একটি চেকে বাংলায় ডিসেম্বর লিখেছি বলে কাউন্টার থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিল। এবারে সব ঠিক হয়ে গেছে। এটাই আমাদের বাংলাদেশ। প্রমাণিত হল, ন্যায়সংগত প্রতিবাদ করলে জয়ী হওয়া যায়। সেই চেকের টাকা ভাঙানো হয়েছে। জয় বাংলা।”

তিনি আরো জানান, “কোনও প্রতিষ্ঠানকে ছোট করতে আমি ওই পোস্ট লিখিনি। লিখেছি ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য। কারণ, বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যে জন্ম নিয়েছিল ভাষার জন্য। বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার জন্য এই দেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছেন। তাই নিজের দেশের ভাষাকে সবার আগে সম্মান দিতে হবে”।