গোয়ায় ইতিমধ্যেই যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে তৃণমূল। একাধিক কংগ্রেস নেতারা দল ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তাদেরই সাথে মাত্র ৩ মাস আগেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলেন এমজিপি সদস্য তথা প্রাক্তন বিধায়ক লাভু মামলাতদার। সামনের বিধানসভা নির্বাচনে মাডকাইম থেকে লড়বেন এমনটাই কথা ছিল। কিন্তু তার আগেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি আচমকা অভিযোগ তুলে দল ছাড়লেন লাভু।
উল্লেখ্য , গোয়ায় যে দল এমজিপির সাথে তৃণমূল জোটবদ্ধ হয়েছে , সেই দলেরই সদস্য ছিলেন পন্ডার প্রাক্তন বিধায়ক লাভু মামলাতদার। তিনি হঠাৎই অভিযোগ তোলেন,”বিজেপির থেকেও সাম্প্রদায়িক দল তৃণমূল।”
এই মর্মে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখে লাভু জানান, “গোয়া এবং গোয়াবাসীর জীবনে উজ্জ্বল দিন ফিরিয়ে আনার প্রত্যাশা নিয়েই তৃণমূলে যোগ দিয়েছিলাম। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় হল তৃণমূল গোয়াবাসীকে বুঝতে পারেনি।” চিঠিতে প্রশান্ত কিশোরের নিয়োজিত সংস্থা আইপ্যাক সম্পর্কে ইঙ্গিত করে লাভু আরো লিখেছেন, “আপনি যে সংস্থাকে নিয়োগ করেছেন, গোয়া গৃহলক্ষ্মী প্রকল্পের মাধ্যমে তথ্য যোগাড় করছে তারা। কারণ গোয়া সম্পর্কে তাদের কাছে কোনও তথ্য নেই।”
শুধুমাত্র এই কারণেই কি মাত্র ৩ মাসের মাথায় দল ছাড়লেন লাভু মামলাতদার? নাকি বড়সড় কোনও ভুল বোঝাবুঝি! সেটা সম্ভবত তৃণমূলও এখনও আন্দাজ করতে পারেনি, কেননা দলের তরফ থেকে এবিষয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সাংবাদিক বৈঠকে লাভু বলেছেন, “তৃণমূল গোয়ায় হিন্দু ও খ্রিষ্টানদের মধ্যে বিভাজনের রাজনীতি করে ঐক্যের সুর কেটে দিতে চাইছে।” লাভুর স্পষ্ট অভিযোগ,”তৃণমূল এমজিপির সাথে জোট করে বিভেদমূলক রাজনীতি করছে। এমজিপি হিন্দুদের ভোট টানবে আর তৃণমূল খ্রিষ্টানদের। এটাই মূল উদ্দেশ্য।”
গোয়ায় প্রথম সমাবেশেই যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জাতীয় সঙ্গীতের অংশ উল্লেখ করে ‘হিন্দু বৌদ্ধ শিখ জৈন পারসিক মুসলমান খ্রিষ্টানি’-র সম্রীতি ও ঐক্যের বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, উল্টে তাঁর বিরুদ্ধেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক অভিযোগ তুলে লাভু মামলাতদার জানিয়েছেন, “আমি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মুগ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। পশ্চিমবঙ্গে তিনি যে কাজ করেছেন তার ফলেই তাঁকে বিশ্বাস করেছিলাম আমি। কিন্তু গত ১৫ দিন ধরে আমার মনে হচ্ছে এই দলটা ভয়ানক সাম্প্রদায়িক। বিজেপির থেকেও মারাত্মক।”
মাত্র পনেরো দিনে কেন এই চিন্তাধারার আশ্চর্য বদল! এবিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস দলের তরফ থেকে মতামতের অপেক্ষায় রয়েছে সংবাদমাধ্যম।