‘দেশপ্রেম ভুলে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস?’ মহারাষ্ট্রের অনুষ্ঠান মঞ্চের আসনে বসে থাকা অবস্থায় মনমর্জিমতো জাতীয় সংগীত গাওয়া নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করল বিজেপি।
সম্প্রতি মুম্বইয়ের শিল্প সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এছাড়াও মুম্বইয়ের কলাকুশলী ও বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিয়েছেন। আর সেই অনুষ্ঠানেই ভারতের জাতীয় সংগীতকে অপমান করেছেন মমতা , এই অভিযোগ তুলে মুম্বইয়ের এক বিজেপি নেতা থানায় মামলা দায়ের করলেন।যদিও এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূলের রাজ্যসম্পাদক স্পষ্টতই বলেছেন, ‘জাতীয় সংগীত কাকে বলে তা বোঝেনা বিজেপি, তাই এমন ভিত্তিহীন অভিযোগ।’

সোমবার শিল্প সম্মেলনে অংশগ্রহণ ছাড়াও শিবসেনা দলের প্রতিনিধি ও এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করে সাংবাদিক সম্মেলনেও যোগ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তারপর মুম্বইয়ের চিত্রতারকা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেয়ে অংশ নিয়েছিলেন। উক্ত অনুষ্ঠানে জাভেদ আখতার, মহেশ ভাট, রিচা চাড্ডা, স্বারা ভাস্কর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এই অনুষ্ঠানের প্রসঙ্গ তুলেই জাতীয় সংগীতকে অপমানের অভিযোগ করে মুম্বইয়ের বিজেপি নেতা প্রতীক কাপরে জানান, “তথাকথিত বিদ্বজ্জনেরা ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের উপস্থিতিতেই, বসে থাকা অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা জাতীয় সংগীত গাইতে শুরু করলেন, আবার হঠাৎ মাঝপথে তা থামিয়েও দিলেন! এটা কি জাতীয় সংগীতের পক্ষে অবমাননার সামিল নয়?”
পাশাপাশি বিজেপি নেতা অমিত মালব্য ট্যুইটার মারফত লিখিতভাবে বলেন, “আমাদের জাতীয় সঙ্গীতই আমাদের জাতীয় পরিচয়। এই সংগীতকে মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে গেয়েছেন তা অবমাননাকর।”
এই অভিযোগ সম্পূর্ণ উড়িয়ে দিয়ে প্রত্যুক্তরে বৃহস্পতিবার ট্যুইট করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেছেন, “জাতীয় সংগীত নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন কুৎসা করছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী ‘জন গণ’ গাননি। গানের ভাবার্থ ধরে বিশ্লেষণ করে দেশের সংহতি, ঐক্য, ঐতিহ্য, সম্প্রীতির কথা তুলে ধরছিলেন। বিজেপি না বোঝে প্রকৃত জাতীয়বাদ, না বোঝে জাতীয় সংগীত, না বোঝে জাতীয় সংহতি।”
অনুষ্ঠান মঞ্চে নিজের স্বতঃস্ফূর্ত অভিব্যক্তি ও কথাবার্তা নিয়ে এর আগেও বহুবার কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। এবারের মুম্বইয়ে সাংবাদিক সম্মেলনেও ‘ইউপিএ’-র অস্তিত্বের প্রশ্ন তুলে সমালোচিত হয়েছেন। তার পরদিনই ভারতের জাতীয় সংগীতকে অবমাননার অভিযোগ। বিদ্বজ্জনের একাংশ অবশ্য মনে করছেন, ‘পাঞ্জাব সিন্ধু গুজরাট মারাঠা’-র আবেগ প্রসূত শব্দবন্ধের সংযোগ বোঝাতেই তিনি ‘জয় মহারাষ্ট্র!’ বলে উচ্ছাস প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে এই অনুষ্ঠানের স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিওকে অস্ত্র করেই মহারাষ্ট্রের বিজেপি নেতৃত্ব মমতার বিরোধিতায় সোচ্চার হয়ে উঠেছেন।