বক্তৃতা দেওয়ার সময় উত্তেজনার চোটে জ্ঞানকান্ড হারিয়ে বসলেন ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল নেতা অভীক মজুমদার। ঔদ্ধত্যের ভঙ্গীতে “সরকার আমাদের, পুলিশ আমাদের” এইধরণের মন্তব্যের ফলে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। সেই বক্তৃতার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে রীতিমতো শোরগোল তুলে দিয়েছে।
গত রবিবার ভাঙরের ভোজের হাটে একটি ফুটবল ম্যাচের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে এমনই বিস্ফোরক মন্তব্য করে বসলেন ডায়মন্ডহারবারের যাদবপুর জেলার তৃণমূল সভাপতি অভীক মজুমদার। ক্রীড়া অনুষ্ঠানের সূচনায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে এক জায়গায় তিনি বলেছেন, “বাংলায় আমাদের সরকার, বাংলায় আমাদের পুলিশ, বাংলায় আমাদের প্রশাসন”। এখানেই থামেননি তৃণমূল নেতা, এরপর থানাসুদ্ধু নিজের সম্পত্তি এমন মনোভাব দেখিয়ে যোগ করেছেন, “কাশীপুর থানার আইসি আমাদের, কেএলসি থানার আইসি আমাদের, পুলিশ প্রশাসন আমাদের। ইঞ্চিকে ইঞ্চিতে আমরা বুঝে নেব”।
তৃণমূল নেতা অভীক মজুমদারের এই বক্তৃতার এই ভিডিও এখন নেটমাধ্যমে ভাইরাল। বিতর্ক তুঙ্গে। তিনি আরো বলেছেন, “বাংলার রাজনীতিতে কোনোরকম মেরুকরণ আমরা মানবনা। দরকার পড়লে আমরা লাঠি হাতে খেলতে নামব”।
তৃণমূলের ‘খেলা হবে’ শ্লোগান ইতিমধ্যেই বেশ বিখ্যাত। তবে লাঠি নিয়ে ফুটবল খেলার ব্যাপারটা অনেকেরই ঠিক বোধগম্য হচ্ছেনা। তবে প্রসঙ্গত জানা গেছে আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকীর এই মাঠে সভা করা নিয়েই বিরুদ্ধ মনোভাব দেখিয়ে কথাগুলো বলেছেন অভীক মজুমদার। ছাড় পায়নি বিজেপিও। তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদই শেষ কথা। তৃণমূল ছাড়া আর কোনো বিরোধী দলই এই মাঠে ঢুকতে পারবেনা, প্রশাসনিক অধিকার ফলিয়ে বাকি বক্তব্যে সেটাই বোঝাতে চেয়েছেন তিনি।
এ প্রসঙ্গে বিজেপি নেতা সুনীপ দাস প্রতিক্রিয়ায় জানান, “আমরা প্রথম থেকেই অভিযোগ করতাম প্রশাসন এবং তৃণমূল কংগ্রেস পার্টি দুটোই এক। আজ তার প্রমাণ পেয়ে গেলাম। আজ অভীকবাবু দাবি করেছেন, “কাশীপুর থানা, ভাঙর থানা সবই ওঁর পৈতৃক সম্পত্তি। এই মনোভাব ক্ষতিকারক “। প্রশাসনের উদ্দেশ্যে বিজেপি নেতার বার্তা, “মেরুদন্ড থাকলে পুলিশকে পদক্ষেপ নিতে বলছি”।
তৃণমূল নেতা কাইজার আহমেদ অবশ্য বিষয়টির ভুল ব্যখ্যা হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন। তাঁর মতে, “তিনি(অভীক) এসব বলেননি। বলেছেন সরকার আমাদের, পুলিশ মন্ত্রী আমাদের। আসল কথা হল বিনা অনুমতিতে আব্বাস সিদ্দিকী ঢুকতে চেয়েছিলেন, কিন্তু ঢুকতে পারেননি “।
প্রসঙ্গত, এই মাঠেই কিছুদিন আগে সভা করতে এসেছিলেন আইএসএফ নেতা আব্বাস সিদ্দিকী। তাঁরা জানিয়েছেন পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ তা অস্বীকার করে।
কিন্তু কোন পুলিশ? তৃণমূল নেতা অভীক মজুমদারের পুলিশ? নেতার এদিনের বক্তব্যে সেই ইঙ্গিতই যে আরো স্পষ্ট হয়ে উঠল, বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরগুলো এমনই মনে করছেন।