রাজ্যের স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত পরিকল্পনা বিহীন, একথা কেন্দ্রীয় শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার আগেই বলে সতর্ক করেছিলেন। কার্যত ওই অভিযোগ হাল্কাভাবেই নিয়েছিল রাজ্য সরকার। ত্রিপুরার পরিস্থিতি তুলনা টেনে কুনাল ঘোষ তখন একরকম বলেই দিয়েছিলেন ‘করোনা পরিস্থিতি’ বলে কোথাও কিচ্ছু চোখে পড়ছেনা, তাহলে স্কুল খোলার ক্ষেত্রে বাধা কিসের? এবার স্কুল খোলার ঘোষণা করে নির্দেশিকা জারি হতেই অভিযোগ উঠল জোরালোভাবে। রাজ্য সরকারের স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত পরিকল্পনা বিহীন এই মর্মেই জনস্বার্থ মামলা দায়ের হল হাইকোর্টে।

পূজোর পর স্কুল খোলার কথা আগে ঘোষণা করলেও বিষয়টি পরিস্থিতি এবং মুখ্যমন্ত্রীর বিবেচনাধীন বলে জানিয়েছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। এই অবস্থাতেই গতকাল রাজ্যসরকারের চূড়ান্ত অনুমোদন জানিয়ে বলা হয় আগামী ১৬ নভেম্বর স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
করোনা পরবর্তীকালে প্রথম স্কুল খোলার ক্ষেত্রে দূরত্ব বিধি বা স্যানিটাইজেশন এই ধরনের কিছু সাধারণ পরিকল্পনার কথা জানালেও, কিছু প্রশ্নের উত্তর অমীমাংসিতই ছিল। যেমন — স্কুল খোলা সত্ত্বেও সমস্ত অভিভাবক যদি ছেলেমেয়েদের পাঠাতে না চান, তাহলে কী হবে? বিষয়টি ভেবে দেখা হবে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। পাশাপাশি উঠেছে টিকাকরণ প্রসঙ্গ। ব্রাত্য বসু দাবি করেন একমাত্র এই রাজ্যেই সমস্ত শিক্ষকদের দুটি করে টিকা নেওয়া হয়ে গেছে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের টিকাকরণ! সবার হয়েছে কি!

এবার এই প্রশ্নটাই বড় হয়ে দেখা দিল। সরকার দ্বারা ঘোষিত নির্দেশিকার বিরোধীতা করে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা করেছেন আইনজীবি সুদীপ ঘোষ। তিনি বলেছেন, “স্কুল খোলা হচ্ছে অথচ শিক্ষার্থীদের ভ্যাকসিন দেওয়ানো হয়নি। এই পরিস্থিতিতে ক্লাস করা উচিত কিনা তা খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হোক”। স্কুল খোলা বন্ধ এবং মধ্যবর্তী সময় নিয়েও যথাযুক্ত বিবেচনার দাবি করেছেন আইনজীবি সুদিপ ঘোষ।
এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা বৃহস্পতিবার। সরকারের ঘোষিত দিনে স্কুল খুলছে কিনা, সেটা জানতে আপাতত ওই দিনটারই অপেক্ষা।