ভবানীপুরের ফলাফল ঘোষণার চব্বিশ ঘন্টা পর মুখ খুলল বিজেপি। খুলল যখন মুখ, তখন সেই মুখ যে বাংলার মুখ দিলীপ ঘোষই হবেন সেটাই তো স্বাভাবিক! যে নেতা মুখ খুললে একের পর এক বিতর্ক তৈরি হয়, বাংলা বিজেপির সেই নেতাই এবার সরব হলেন মমতা ব্যানার্জীর বিরুদ্ধে। এবার দিলীপের অস্ত্র একটি সংখ্যা ৫৭।

মমতা ব্যানার্জীর উপনির্বাচন জয়ে সারা পড়ে গেছে চতুর্দিকে। শুধু এই বাংলা নয়, ভিনরাজ্য থেকেও শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন একাধিক বিরোধী দল। যদিও ভবানীপুরের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী যিনি নিজেকে ‘ম্যান অফ দ্য ম্যাচ’ বলেছেন (পড়ুন -উওমেন) সেই বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল শুভেচ্ছা জানিয়েও কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। ভোট কারচুপির ইঙ্গিত দিয়ে সূচনাটা আগেই করেছেন। এবার হাল ধরলেন বিজেপির প্রাক্তন রাজ্যসভাপতি দিলীপ ঘোষ।
‘প্রাক্তন’ হলেও তিনি যে বাঙালির হয়ে বাংলার মেয়ের মুখোমুখি এখনও লড়াই জারি রেখেছেন এর জন্য প্রথমেই এক রাউন্ড ‘ক্ল্যাপ’ দিয়েছে রাজনৈতিক মহল।
ভবানীপুরে দিলীপ ঘোষের এবারের বক্তব্য একটু অভিনব, সংখ্যাতত্ত্ব মিশে রয়েছে তাতে।
যেখানে ৫৮ হাজারেরও বেশি ভোট পেয়ে ব্যাপক হারে জয়ী হয়েছেন মমতা, সেখানে দিলীপ বাবু আটকে রয়েছেন ৫৭ শতাংশে। হ্যাঁ, দিলীপবাবুর বক্তব্য “বাংলার মানুষ যদি সত্যিই মমতাকে প্রধানমন্ত্রী দেখতে চায় তাহলে মাত্র ৫৭ শতাংশ ভোট পড়ল কেন? আরও বেশি ভোট পড়ল না কেন?”
উল্লেখ্য, এবার ভবানীপুর উপনির্বাচনে সর্বমোট ৫৭ শতাংশ ভোট পড়েছে। এই সাতান্নয় মিশে রয়েছেন বিজেপি ও সিপিআইএমের ভোটও। সেখানে দিলীপ বাবুর এই অদ্ভুত সংখ্যাতত্ত্ব কী প্রমাণ করতে চাইছে? সেটা রাজনৈতিক মহলের বোধগম্য হয়নি। তাই তাঁরা প্রশ্নটা রেখেছেন।

একইসাথে দিলীপ ঘোষ অভিযোগ করেছেন, তৃণমূল কর্মীরা ভয় দেখিয়ে বিজেপি ভোটারদের বাড়ি থেকে বেরোতে দেয়নি। যদিও এ অভিযোগের সপক্ষে কোনো প্রমাণ তিনি বা তাঁর দল বিজেপি সামনে রাখতে পারেননি।
দিলীপবাবু আরও কারণ দেখিয়ে বলছেন,”বিধানসভায় একটা হাওয়া উঠেছিল, অনেকেই ভেবেছিল বিজেপি জিতবে তাই তারা ভোট দিয়েছে। ভবানীপুরে ভোটে হারার ফলে এবার সেইসব ফ্লোটিং ভোটাররা ভোট দেননি।তাই ভোট কমে গেছে”।
দিলীপ ঘোষ যাদের ‘ফ্লোটিং ভোটার’ বলে উল্লেখ করেছেন, বুঝতে কারুর অসুবিধা হয়না, ওইসব ভোট তৃণমূলেই গেছে, কিন্তু এতে দিলীপবাবুর নতুন আবিস্কারটা কোথায় সেটাই অনেকে বুঝে উঠতে পারছেননা।
তাই রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন– জনসাধারণের একটা বৃহৎ অংশ ‘ফ্লোটিং ভোটে’ মমতা ব্যানার্জীকে জেতাবার পরেও কীকরে তিনি ৫৭ শতাংশে আটকে রয়েছেন? তিনি কি বুঝতে পারছেননা ওই ৫৭ শতাংশের মধ্যেই বিপুল ভোট পেয়েছেন মমতা ব্যানার্জীই?
বাকিটা সংখ্যা তাত্ত্বিকরাই বিচার করে দেখুন।