অধীর চৌধুরী ছটফট করছেন। সিপিএমের সাথে বিচ্ছেদ বেদনায় যেন রাতের ঘুম চলে গেছে তাঁর। রাজনীতির অভিজ্ঞরা বলছেন শুধু অধীর একা নন, জাতীয় কংগ্রেস দল সম্প্রতি ‘জাগোবাংলা’-র জ্বালা ধরানো সম্পাদকীয়র জ্বালায় ছটফট করছে। তাই কি সিপিএমের সাথে ঘনিষ্ঠতা করতে এত ইচ্ছুক কংগ্রেস? প্রশ্নটা বড় হয়ে দেখা দিয়েছে।
এমন ইচ্ছার কথাই ঘোষনা করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
বিধানসভায় বাম-কংগ্রেস জোটে দুপক্ষের কেউই তেমন লাভবান হয়নি। উপনির্বাচনের আগে দুপক্ষের সম্পর্কে চিড় ধরে, জোট ভাঙার কথা সরাসরি ঘোষণা করে দিয়েছিল সিপিএম। বরং বিজেপি বিরোধী জোটে তৃণমূল ডাকলে যেতে পারেন এমন ইঙ্গিতও করেছেন সিপিএম পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি। তাহলে কংগ্রেস বামশিবিরকে তৈলমর্দনে এত উৎসাহী কেন, সে প্রশ্নই রাজনৈতিক মহলের একাংশ করছেন।
পূজোর পর শুভেচ্ছা বিনিময় করতে অধীর চৌধুরী নিজে বিমান বসুর সাথে দেখা করতে যাবেন বলেই খবর। এমনকি দুপক্ষের ভুলবোঝাবুঝি মেটাতে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রর সাথেও কথা বলেছেন তিনি। সিপিএম জোট ভাঙার কথা বললেও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেন, “বামেদের সঙ্গে জোট ভাঙার কোনো কথা হয়নি। আমরা জোট ভাঙতে চাইনা বলেই খড়দা, দিনহাটা, গোসাবায় প্রার্থী দিইনি”। এভাবেই ‘ভবানীপুরের’ ক্ষত স্থানে মলম লাগাতে চাইছেন অধীর চৌধুরী।
ভবানীপুর সহ ৩ কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের ব্যাপক বিপুল জয় মমতা ব্যানার্জীকে সর্বশ্রেষ্ঠ বিরোধীদল হিসেবে ফোকাসে এনে দিয়েছে। কংগ্রেসকে ন্যক্কারজনক ভাষায় আক্রমণ করেও তৃণমূল জোর গলায় বলছে কংগ্রেসকে তারা বাদ দেবেনা, কিন্তু নেতৃত্ব দেবে তৃণমূলই। বামশিবিরের একাংশও মমতা ব্যানার্জীর এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়েছেন।
অধীরবাবু যদিও বলছেন, “বাংলা আমার দিল্লী তোমার, দিদি ও মোদীর এই সমঝোতার ফলেই কংগ্রেসকে সরাতে চাইছে তৃণমূল”। কথাটা মানতে নারাজ তৃণমূল শিবির। এমনকি অনেকেই সেটা বিশ্বাস যোগ্য বলে মানছেননা। তৃণমূল নেতা কল্যাণ ব্যানার্জী অধীর বাবুকে কটাক্ষ করে জবাব দিয়েছেন, “যে নিজেই মোদীর কোলে চড়ে ঘুরে বেড়ায় তার এসব কথার কোনো গুরুত্ব নেই”।
গত ৩ কেন্দ্রের উপনির্বাচনে যে সিপিএম
ডাহা হেরে কার্যত ভেন্টিলেশনে, তাদের সাথে জোট বাঁচাতে কেন হঠাৎ উঠে পড়ে লাগলো কংগ্রেস! সেই অঙ্কই কষছেন রাজনৈতিক মহল।