করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই আবার একটি নতুন ভ্যারিয়ান্টে রূপান্তর ঘটল কোভিড ভাইরাসের — যার নাম ওমিক্রন। সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে সংক্রমিত হয়ে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ছে করোনার এই নতুন সংস্করণ। সতর্কতা জারি হয়েছে এশিয়া, ইউরোপ , আমেরিকা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার বতসোয়ানা, নামিবিয়া, জিম্বাবোয়ে-তে।
আলফা, ডেল্টার মতোই গ্রীক শব্দ অনুসারে এই নতুন রূপটির নাম দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা ‘ওমিক্রন’। তবে করোনার আগের ভ্যারিয়ান্টগুলির চেয়ে আলাদা এবং অধিক প্রভাবসম্পন্ন এই ওমিক্রন। ইতিমধ্যেই WHO এটিকে উদ্বেগজনক আখ্যা দিয়েছে।
বিশিষ্ট বাঙালি চিকিৎসক কুনাল সরকার বলছেন, “বতসোয়ানায় সর্বপ্রথম এই ভ্যারিয়ান্টটি ধরা পড়েছে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার এই মূহুর্তে বড় আতঙ্কের কারণ করোনার এই নতুন স্ট্রেন। প্রথমত, নজরে রাখতে হবে এই স্ট্রেনটি কোনও ভাবেই যাতে ছড়িয়ে না পড়ে। আর সেজন্যেই যেখানে এই ভ্যারিয়ান্টটি ধরা পড়েছে সেই সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিকে সম্পূর্ণ সিল করে সেখানেই আক্রান্তদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা উচিত”।
পূর্বের সংক্রমণের দুটি ধাক্কায় আমরা বেশ খানিকটা অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি। ফলে আগে থেকেই সতর্কতা অবলম্বন করা সহজতর হওয়া যেতে পারে অনেকক্ষেত্রেই। মাস্ক, স্যানিটাইজার ব্যবহার সহ সাধারণ সতর্কতা তো অপরিহার্য থাকছেই, পাশাপাশি টিকাকরণ প্রক্রিয়াকে আরো ত্বরান্বিত করতে নির্দেশ দিচ্ছেন সমস্ত চিকিৎসকরাই। এমনকি যাঁরা নিজে থেকে টিকা নিতে সামনে আসছেন না, সেক্ষেত্রে তাঁদের শনাক্ত করে টিকাকরণ আবশ্যিক করতে বলছেন ডক্টর রণদীপ গুলেরিয়া।
এছাড়াও দক্ষিণ আফ্রিকা সংলগ্ন দেশগুলিতে এর মধ্যেই যারা ভ্রমণ করেছেন তাঁদের স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে কোয়ারেন্টাইনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। যান চলাচল বিশেষত সেইসব দেশের সাথে সংযুক্ত ফ্লাইট পরিষেবায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ইতিমধ্যেই জার্মানির এক স্বাস্থ্য দপ্তর দক্ষিণ আফ্রিকাকে ‘রূপান্তরিত ভাইরাসের এলাকা’ বলে চিহ্নিত করেছে।
বাংলাদেশের আইইডিসিআর সংস্থার পরিচালিকা ডক্টর তাহমিনা শিরিন একটি সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, “ভাইরাসের রূপ বদলানো খুব স্বাভাবিক বিষয়। আর তাই স্বাস্থ্যবিধি সবসময় মানতে হবে, এর কোনও বিকল্প নেই”।
স্বাস্থ্যবিধি এবং সামাজিক দূরত্ব এই দুটি বিষয়ের ওপরেই প্রায় সব দেশের চিকিৎসকরাই জোর দিচ্ছেন। পাশাপাশি প্রচলিত নতুন ভ্যারিয়ান্ট ওমিক্রন দমনে প্রচলিত ভ্যাক্সিন কতটা কার্যকরী সেই নিয়েও পরীক্ষা নিরীক্ষা ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। সুতরাং আতঙ্ক নয়, সাবধানতা এবং প্রতিরোধ এই দুটি শব্দের ওপরেই জোর দিতে হবে–বলছেন চিকিৎসকরা।