কথা শিখতে হয় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির কাছে। ছুরি ধার দেওয়া মেশিনের মতোই কথার ফুলকিতে অধীর চৌধুরী মশায়ের জুড়ি নেই। সর্বক্ষণই যেন জিভে শান দিচ্ছেন “মুর্শিদাবাদের রবিনহুড”।
ভাবগতিক যদিও বরাবর এটাই প্রমাণ করে – তিনি নিরপেক্ষ। বিরোধী হিসেবে ক্ষমতাসীন যেকোনো দলের যেকোনো ইস্যুই তাঁর নিশানা। কখন যে কার পক্ষে বোঝা মুশ্কিল।
কার্যক্ষেত্রে যদিও তিনি বা তাঁর দল নিরপেক্ষ নন, কেননা ‘রাজনীতি’তে নিরপেক্ষ শব্দটা কাঁঠালের আমসত্ত্ব-র মতোই শোনায়। গত বিধানসভা নির্বাচনে বাম-কং জনমোর্চাই তার প্রমাণ। যদিও সে জোটে ভরাডুবিই হয়েছে শেষ অবধি, মুর্শিদাবাদেই। আর তারপর থেকে যেন “রবিন হুড” বেশি বেশি নিরপেক্ষ হয়ে উঠেছেন গত দুদিন ধরে। কখনো তৃণমূলের কান ধরে টানছেন তো কখনো আবার বিজেপির দিকে তোপ ঝাড়ছেন।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী রুজিরাকে ইডির তলবে ক্ষুব্ধ মমতা ব্যানার্জীর প্রতিজবাবে ২৮ শে আগস্ট আগুন ঝরেছিল মমতা ব্যানার্জীর বক্তব্যে। স্পষ্টই হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন “রাজ্য সরকারের কাছেও নথিপত্র আছে”। কেন্দ্র ইডি দেখালে তিনিও বস্তাভর্তি কাগজ পেশ করবেন। স্বভাবমতোই দিলীপ ঘোষের গোরুর দুধ খাওয়া জিভ থেকে সোনার বাক্য ঝরেছিল “বারো কোটির বাড়িতে ভাইপো থাকেন। কোথা থেকে এল সে টাকা? তদন্তের নাম শুনেই মমতা ও তাঁর ভাইপো ভিখারি সাজছেন”।
দিলীপ ঘোষের এই কথারই প্রতিবাদেই সরব হয়ে উঠলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। সোমবার সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন,”ইডি ও সিবিআইকে মোদী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ নির্লজ্জের মতো ব্যবহার করছেন। হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য, তাই তদন্ত হোক। তবে কেন্দ্র ও রাজ্য প্রশাসন দুপক্ষই যেন নিরপেক্ষ থাকেন”।
পাশাপাশি সুযোগ খুঁজে তৃণমূলকেও চিমটি কাটতে
ছাড়ছেননা। লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে কটাক্ষ করে অধীর চৌধুরী ভান্ডার ফাঁকা হয়ে যাওয়ার আশংকা প্রকাশ করেছেন। সরকারি প্রকল্প মানুষকে দেওয়া উচিত একথা স্বীকার করেও তাঁর সচেতন বাণী “রাজ্য সরকারের নিজেরই সবথেকে বেশি লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প দরকার”।