কী হওয়ার ছিল আর উল্টে একি হলো! দুদিন আগে পর্যন্ত গোয়ার রাজনৈতিক হাওয়া বলছিল, মমতা ব্যানার্জী বিপুল অভ্যর্থনা পাবেন। কেননা সেখানকার প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেসের প্রচুর নেতা ইতিমধ্যেই তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। এমনি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং তৃণমূলের ব্যানারে চলে এসেছেন!
কিন্তু গতকাল গোয়ায় পা রাখতে না রাখতেই উত্তপ্ত আবহাওয়া। মমতা ব্যানার্জীকে লক্ষ্য করে দেখানো হল কালো পতাকা! কারা দেখালো? ষড়যন্ত্রের আভাস পেয়েছে তৃণমূল।
উত্তরবঙ্গ সফর সেরেই গোয়ায় পৌঁছে গেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়া মুুখ্যমন্ত্রী। আরব সাগরের পাড়ে তৃণমূলের ভিত্তিভূমি তৈরির লক্ষ্যেই এগোচ্ছেন তিনি। আগামী বছর গোয়ার মোট ৪০ টি আসনে বিধানসভা নির্বাচন। সেখানে গোয়া দখলের আগাম ঘোষণা আগেই করে দিয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার থেকেই বাবুল সুপ্রিয় আর সৌগত রায়ের নেতৃত্বে ইলেকশান ক্যাম্পেন শুরু হয়ে গেছে। ২৮ অক্টোবরই নির্ধারিত ছিল গোয়ায় পৌঁছবেন মমতা ব্যানার্জী। কিন্তু বিকেলে বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে কিছুদূর এগোনোর পরেই ১৫-২০ জন লোক মমতা ব্যানার্জীর কনভয় লক্ষ্য করে কালো পতাকা দেখাতে শুরু করে। যার অর্থ ‘ফিরে যাওয়ার’ ইশারা। সেসব পাত্তা না দিয়েই মমতা ব্যানার্জীর গাড়ি পাঞ্জিম পৌঁছবার লক্ষ্যে এগোয়।
এই অপ্রীতিকর ঘটনায় স্পষ্টতই বিজেপির ষড়যন্ত্র দেখতে পাচ্ছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাঁদের মতে সাধারণ মানুষ নয়, বিজেপির দলবলের লোকজনই এই কান্ড ঘটিয়েছে।
গোয়া সরকারের আইনশৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে মমতা ব্যানার্জী আগে থেকেই সরব। একাধিক অপরাধ ও নারী নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা। এমনকি কর্মসংস্থানেরও বেহাল অবস্থা। সেই ইস্যুতে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগও দাবি করেছেন তিনি। গেরুয়া শিবির অবশ্য তা মানতে নারাজ। তাঁদের দাবি সরকার ৮৬ শতাংশ দুর্নীতির তদন্তেই সাফল্য দেখিয়েছে, যা রীতিমতো দৃষ্টান্ত।
গোয়ার বিজেপি রাজ্য সভাপতি সদানন্দ তানাবাড়ে বলেছেন, “মমতা ব্যানার্জী গোয়ায় এসে অফিস খুলে বাংলা চালালেও গোয়ার ভোটে তার কোনও প্রভাব পড়বেনা। ভোটের পর গোয়ায় তৃণমূলের দোকান বন্ধ হয়ে যাবে। মনে রাখতে হবে ভাড়াটে লোক দিয়ে গোয়ায় ভোট হয়না। দিদি গোয়ায় আসুন, দেখুন, থাকুন। আর গোয়া থেকে কিছুটা গণতন্ত্র শিখে গিয়ে বাংলায় প্রয়োগ করুন”।
এতটাই জোরালো দাবি করেছেন গোয়ার বিজেপি নেতৃত্ব। এদিন মমতা ব্যানার্জী পৌঁছোবার সাথে সাথেই কালো পতাকা প্রদর্শন তারই একটা দুঃসাহসিক নমুনা বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।