বর্তমানে বাংলা ও বাঙালির দুর্গোৎসব ঘিরে থিমপূ্জোর রমরমা। তার সুযোগেই দর্শনার্থীরা ঠাকুর দেখার পাশাপাশি নানারকম শিল্পকারুকাজ দেখেও মুগ্ধ হন। তবে দমদম পার্কের এবারের থিম পূজো শুরুর আগেই বিতর্কের মুখোমুখি। জুতো দিয়ে মন্ডপসজ্জা! তীব্র প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। পূজো কমিটিকে পাঠানো হল আইনি নোটিশ।
দমদম পার্কের মতো এতবড় একটা পূজো কেন করলেন এরকম? প্রশ্ন উঠেছে তাদের রুচিবোধ নিয়ে। শুভেন্দু অধিকারী ট্যুইট করে বলেছেন,”শিল্পের স্বাধীনতার নামে এধরণের নিন্দনীয় কাজকে কোনোমতেই সহ্য করা হবেনা”। ষষ্ঠীর আগে মন্ডপ থেকে সমস্ত জুতো সরিয়ে ফেলার দাবি জানিয়ে মুখ্যসচিব ও স্বরাষ্ট্রসচিবের হস্তক্ষেপের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। পাঠানো হয়েছে আইনি নোটিশও।
লখিমপুরের কৃষক আন্দোলনকে এবারের পূজো মন্ডপের থিমের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছেন দমদম পার্কের দূর্গাপূজোর উদ্যোক্তারা। ওই মর্মান্তিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই প্যান্ডেলে ব্যবহার করা হয়েছে অসংখ্য হাওয়াই চটি। প্যান্ডেলের গায়ে লেখা হয়েছে “মোটরগাড়ি ওড়ায় ধূলো, পিষে মরে চাষীগুলো”। কিন্তু এইসব কিছুকে আড়ালে ফেলে নিন্দার মুখে পড়েছে দুর্গাপূজোর মতো এমন একটা ধর্মবিশ্বাসপূর্ণ মহোৎসবে ‘জুতোর’ ব্যবহার।
এই পূজো সম্পর্কে মামলাকারী আইনজীবী পৃথ্বীবিজয় দাস বলেছেন, “আমি একজন সনাতন হিন্দু। জুতো দিয়ে মন্ডপ সাজানো কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা। এটা আমাদের ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করছে”।
আজ পঞ্চমী। ইতিমধ্যেই দর্শনার্থীরা মন্ডপ দেখতে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। ঠিক এইসময়েই আইনের নোটিশ খেয়ে বসলেন পূজোকর্তারা। পরোয়ানায় বলা আছে অবিলম্বে জুতো না সরালে কঠিন পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ধর্মে আঘাতই শুধু নয়, এর সাথে রাজনৈতিক যোগসূত্রও খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। এ প্রসঙ্গে আরও এক আইনজীবী স্পষ্ট মতামত দিয়ে বলেছেন , “কিছু কিছু পূজোকমিটি ৫০,০০০ টাকা পাওয়ার লোভে আর তৃণমূল থেকে প্রাইজ পাওয়ার লোভে এইসব করে। আগেরবার দেখলাম যে পূজোকমিটি মন্ডপে আজান শুনিয়েছিল তাদেরকেই সেরা শিরোপা দিয়েছিল ফিরহাদ হাকিমের কলকাতা মিউনিসিপ্যালিটি”।
উল্লেখ্য থিমে বর্ণিত এই কৃষক আন্দোলনই সাড়া ফেলেছিল কিছুদিন আগে। গোটা দিল্লীতে বিক্ষোভ এমনকি লালকেল্লায় ঢুকেও বিক্ষোভের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল। খুব সরাসরিই তাই দমদম পার্কের এই পূজোর সাথে রাজনীতির যোগ খুঁজে পাওয়া গেছে। তার সাথে আছেই ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাতের মতো ঘটনা। সবমিলিয়ে দমদম পার্কের দূর্গাপূজো প্রায় বন্ধ হওয়ার মুখে।