সম্প্রতি দলে সদ্যফেরত রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ত্রিপুরায় স্টিয়ারিং কমিটিতে রেখেছে তৃণমূল। তাঁকে স্বাগত জানিয়ে অনুব্রত মন্ডল বলেছেন,” রাজীবের শুভবুদ্ধি হয়েছে, তাই ফিরে এসেছে”। অপরদিকে রাজীবের কড়া সমালোচনা করলেন অনুপম হাজরা।
কিছুটা ধীর গতিতে এগোচ্ছিলেন রাজীব। বিজেপিতে থাকাকালীন বেসুরো গাইলেও শেষপর্যন্ত তিনি তৃণমূলেই ফিরে যাবেন কিনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয়েই ছিল গেরুয়া শিবির। জাতীয় কমিটির তালিকাতেও তাঁর নাম রেখেছিলেন বিজেপি রাজ্য নেতৃত্ব, যে কারণে তথাগত রায় দিলীপ ঘোষ সহ অন্য নেতাদের একহাত নিয়েছিলেন। তবে মায়ের ঘরেই ছেলের আশ্রয়, এই সত্যিটাই শেষপর্যন্ত প্রমাণ করে যে পথে এসেছিলেন সে পথেই তৃণমূলে ফিরে যান রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
উল্টোদিকে আর এক তৃণমূল ত্যাগী অনুপম হাজরা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের তীব্র সমালোচনা করে এমনকি তথাগত রায়েরও মন জয় করে নিয়েছেন। “তৃণমূল থেকে আসা নেতাদের অতিরিক্ত গুরুত্ব দেওয়ার ফলেই দলের ভরাডুবি” অনুপমের এই বক্তব্যের অকুণ্ঠ সমর্থন করার সময় তথাগত খেয়ালই করলেন না — আসলে সেই বক্তাও তৃণমূল ছেড়েই এসেছেন! আর অনুপম হাজরা বোধহয় ভুলেই গেছিলেন তিনিও একসময় তৃণমূল ছেড়েই বিজেপিতে এসেছেন।
এবারও সেই একই সুরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া সমালোচনায় মুখর হয়েছেন একসময়ের তৃণমূল সৈনিক অনুপম হাজরা। তিনি মন্তব্য করেছেন, “পাপ যত তাড়াতাড়ি বিদায় হয় ততই ভাল”। সমস্ত জমা ক্ষোভ এদিন উগরে দিয়ে অনুপম আরও বলেন, “এটা জানা ছিল, নতুন কিছু নয়। উনি এতদিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে এন্ট্রি পাচ্ছিলেন না, পশ্চিমবঙ্গে এন্ট্রি বন্ধ হল, তাই ত্রিপুরায় যেতে হল ওঁকে। এতদিন যে ওঁকে বিজেপি আদরযত্ন করেছে এটা ভেবেই খারাপ লাগছে। ২-রা মে’র পর থেকেই ওঁর মায়ের কথা মনে পড়ে যায়। বিধানসভা থেকে যখন বার হন তখন কান্নাকাটি করেছিলেন, তাঁকে জামাই আদর করে রেখেছিল বিজেপি। ভালোই হয়েছে, পাপ যত তাড়াতাড়ি বিদায় হয় ততই ভালো”।
উল্লেখ্য, তৃণমূল ছেড়ে বেরোবার সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি বাঁধানো ছবি বুকে নিয়ে কাঁদতে কাঁদতেই বেরিয়ে এসেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। অনুপম সেই ঘটনা মনে করেই কটাক্ষ ছুঁড়েছেন।
রাজীব সম্পর্কে অনুব্রত মন্ডল অবশ্য পুরোনো সবকিছু ভুলে গিয়ে নতুন ইনিংস শুরু করারই পক্ষে। তিনি খুব সাবলীল ভাবেই বলেছেন, “রাজনীতিতে অনেক কিছু হয়। রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই”।