বিজেপি পরাজয়ের মুখ দেখেছে এটা বড় করে দেখছেন না বর্ষীয়ান নেতা তথাগত রায়। কারণ তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন, বিজেপি হারতে অভ্যস্ত। বরং তৃণমূলের অশিষ্টতা এখানেই যে, তারা ‘জিতবে জেনেও গুন্ডামি, ছাপ্পা ভোট ইত্যাদি চালিয়ে গেছে!’
গেরুয়া শিবিরেরই অনেকে এই আশ্চর্য বিশ্লেষণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তবে এটা স্বীকার করছেন তারাও, এমন বিশ্লেষণী ক্ষমতা তথাগত রায়ের মতো প্রাজ্ঞ তাত্ত্বিকের পক্ষেই সম্ভব।
কলকাতা পুরনির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের দিনই তথাগত রায় প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছিলেন,”যা হওয়ার তাই হয়েছে। তবু দুঃখ তো চেপে রাখা যায়না। কাল ট্যুইট হবে।”
কথা রেখেছেন তথাগত রায়, দলের দুঃখে অংশীদার হয়ে, একেবারে ট্যুইটের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন।
ট্যুইটগুলির মূল অংশ তুলে ধরলে যা দাঁড়াচ্ছে তা এইরকম –“একটা দল ভেঙে পড়েও আবার উঠে দাঁড়াতে পারে যদি তার ইচ্ছা থাকে। তার জন্য হারের বিশ্লেষণ করতে হয়, course correction করতে হয়..”। এইভাবে প্রথমে নিরপেক্ষ নেতা সিপিএমের ঘুরে দাঁড়ানোর কোর্স কারেকশন করেছেন।
এরপর তৃণমূল সম্পর্কে মতামত দিয়ে প্রায় খেই হারিয়ে অদ্ভুত মত প্রকাশ করে বললেন, “এই পুরসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রচুর কারচুপি করেছে, কিন্তু শুধু তা দেখলেই হবে না। তৃণমূল দলটার চরম অসাধুতার প্রকাশ এইখানে যে তারা জানত তারা ভালভাবেই জিতবে, কিন্তু তা সত্ত্বেও তারা গুন্ডামি, বদমায়েশি, ছাপ্পা করেছে, পুলিশকে দিয়ে দলদাসের মতো আচরণ করিয়েছে।” এই ট্যুইটবার্তাএমনকি বিজেপি সমর্থকরাও পুরোপুরি বুঝে উঠতে পারেননি। আর অবোধ জনগণ প্রশ্ন রেখেছেন, একটা দল যেখানে জানেই তারা জিতবে, তাসত্ত্বেও তারা কারচুপি করতে যাবেই বা কিসের জন্যে?”
বিশেষ করে পরের ট্যুইটেই যেখানে তথাগত বাবু বলেছেন, “বস্তুত বিজেপির শতাংশের হিসেবে তৃতীয় স্থানে নেমে যাওয়া কোনো নতুন ঘটনা নয়। বিধানসভা নির্বাচনে যে বিপর্যয় হয়েছিল এটা তারই প্রসারণ!”
তার মানে তৃণমূলও জানতো তারা এমনিতেই জিতবে! বিজেপিরও জানা ছিল হার নিশ্চিত। তাহলে ভোট কারচুপির প্রশ্নই বা আসছে কীকরে?
এটা জনসাধারণের প্রশ্ন, তথাগত রায় শুধু নয়, বিজেপি দলের প্রতি। কেননা, মূল বক্তব্যে দিলীপ ঘোষের মতো অন্যান্য নেতারাও এই একই মতপ্রকাশ করেছেন।