পুরভোটের ফলাফল প্রকাশের প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই কাড়ানাকাড়া বাজিয়ে এটাই প্রমাণ করতে সচেষ্ট বিজেপি — এই পরাজয়ের ব্যাপারে তৃণমূল সবটাই আগে থেকে জানতো। একেবারে যেন পরিকল্পনা মাফিকই ঘটেছে সবকিছু। এতে কি নিজেদেরই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি আরো বেশি নিশ্চিত হয়ে যাচ্ছেনা!
কেননা, একদিকে বিবৃতি দিয়ে বিজেপি নেতারা বলছেন, তাঁরা এসময়ে পুরভোটের জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলেননা, তাই যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব হয়নি। সেই তাঁরাই ঘুরিয়ে বলছেন, আগে থেকেই পরাজয় নিশ্চিত ছিল! এমনকি সেটা তৃণমূলেরও জানা ছিল! পরক্ষণেই দাবি করছেন তৃণমূলের ছাপ্পা ভোট, গুন্ডামির! এই বক্তব্যগুলো এতটাই স্ববিরোধী যে , এটা বুঝতে বিশেষজ্ঞের প্রয়োজন হয়না, এমনটাই বাংলার সাধারণ মানুষ মনে করছেন। তার সাম্প্রতিক দৃষ্টান্ত দিলেন শুভেন্দু অধিকারী।
বুধবার নদীয়া জেলার হাঁসখালিতে একটি দলীয় সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “কোন দল কত সিট পাবে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো সেটা আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন।” এরপরই একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক আক্রমণ শানিয়ে বলেছেন, “খারাপ ইভিএম ব্যবহার করে, সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ রেখে নির্বাচন সম্পন্ন করেছে তৃণমূল। আসলে কলকাতায় সেদিন কোনও ভোটই হয়নি।”
এর আগে দিলীপ ঘোষ তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, “যা হবার ছিল তাই হয়েছে।” বর্ষীয়ান ট্যুইটতাত্ত্বিক নেতা তথাগত রায় তত্ত্বগতভাবে বুঝিয়েছেন, “বিজেপির তৃতীয় অবস্থানে যাওয়া নতুন কিছু নয়, বিধানসভা ভোটের ফলাফলেরই প্রসারণের ফলে এটা হয়েছে।”
গেরুয়া শিবিরের প্রত্যেকিরই দাবি, এসময়ে নির্বাচনের জন্য দল প্রস্তুত ছিলনা। তারপরেও শুভেন্দু অধিকারী সহ অন্যান্য বিজেপি নেতাদের তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি অন্ধ আক্রমণ তাঁদেরই অস্বস্তির মুখে ফেলছেনা কি! প্রবচন অনুযায়ী হাতি কাদায় পড়ে যতই হাঁকপাক করে ওঠবার চেষ্টা করে, ততই সে আরো বেশি ডুবে যায়। পরাজয়ের ঢাক পিটিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু সহ অন্যান্যরা তেমনটিই করছেন বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
অপরপক্ষে, তৃণমূলের কী প্রতিক্রিয়া? না, এব্যাপারে তাদের সরাসরি কোনও প্রতিক্রিয়া আপাতত পাওয়া যায়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখন বিবিধ কর্মসূচি নিয়ে ব্যস্ত , বাংলার মানুষ তো সেটাই লক্ষ্য করছেন।