কিছুদিন আগেই রাজ্যসরকারি প্রকল্প ‘মা কিচেন’-এর হিসাব নিয়ে প্রশ্ন তুলে রাজ্যসরকারকে নিশানায় বিঁধেছিলেন, আজ আবার ট্যুইট করে ‘পেগাসাস’ প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রীকে প্রশ্নে বিদ্ধ করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। ‘পেগাসাস’ সম্পর্কে কেন এখনও কোনও তথ্য পেশ করা হলনা, তাই নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা তাঁর চিঠিটাও ট্যুইটে জুড়ে প্রকাশ করেছেন।
রাজ্যপালের বক্তব্য,”পেগাসাস কমিশন নিয়ে রাজ্যের মুখ্যসচিব ব্যর্থ প্রতিপন্ন হচ্ছেন। তার ফলেই মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করে এই চিঠি।” দ্রুত পেগাসাস কমিশনের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন তিনি।
ট্যুইটে রাজ্যপাল আরো লিখেছেন , “সংবিধানের ১৬৭ ধারা অনুযায়ী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ২৬ জুলাই, ২০২১ সালের তদন্ত কমিশনের নোটিশ এবং কর্মপ্রক্রিয়া সংক্রান্ত নথিপত্র পেশ করতে বাধ্য। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মুখ্যসচিব কোনওরকম তথ্য দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।”
উল্লেখ্য, গত এপ্রিল মাসে এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দাবি করেছিল, পেগাসাস নামের এক ইজরায়েলি স্পাইওয়্যারের সাহায্যে দেশের বিরোধী দলগুলোর ওপর গোপন নজরদারি চালাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। এরপরই ২৬ জুলাই রাজ্যসরকারের উদ্যোগে একটি তদন্ত কমিশন গঠিত হয়। এই কমিটির শীর্ষে ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি মদন লকুর ও কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য। এই তদন্ত কমিশনের কাছেই গত ৬ ডিসেম্বর থেকে ১৬ ডিসেম্বরের মধ্যে তদন্ত সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে নির্দেশ দেন রাজ্যপাল।
এরই মধ্যে পেগাসাস কমিশনের তদন্ত সংক্রান্ত কার্যে স্থগিতাদেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু রাজ্যপালের অনড় দাবি, পেগাসাস কমিশনের রিপোর্ট তাঁকে দিতেই হবে। অন্যথায় প্রশাসন রাজ্যপালের নির্দেশ উপেক্ষা করছে বলেই গণ্য করা হবে!
স্বাভাবিকভাবেই রাজ্যপালের এই ট্যুইট নতুন বিতর্ক সৃষ্টি করেছে।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথে দ্বন্দ্বে জড়াতে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় প্রতিনিয়তই ইস্যু তৈরি করছেন, এমনটাই মনে করছে তৃণমূল সরকার। গত সপ্তাহেই ‘মা কিচেন’ প্রকল্প নিয়ে হিসেব তলব করেছিলেন। রাজ্যপালের বক্তব্য, সাধারণ মানুষদের স্বার্থে এই প্রকল্প শুরুর কথা এপ্রিলে। তাই ফেব্রুয়ারী থেকে মার্চ পর্যন্ত এই খাতে বরাদ্দ টাকার ‘অসাংবিধানিক প্রয়োগ হয়েছে। অতএব রাজ্যসরকারের কাছে এই দুই মাসের সমস্ত খরচের পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসাব দিতে হবে।
আর এবার ‘পেগাসাস কমিশন’ নিয়ে আবারো রাজ্যসরকারের সাথে নতুন দ্বন্দ্বে জড়ালেন রাজ্যপাল।