“ধর্ম যার যার, উৎসব সবার”। সংলাপটা হয়তো চেনা। একটি আদর্শ রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে আসলে যা বোঝায়, অনেকেই হয়তো সেটা জানেন। কিন্তু তাকে অন্তর থেকে মানতে পারেননা হয়তো সবাই। এদিন বাংলাদেশের হাজীগঞ্জে একটি অনুষ্ঠানে এই বার্তা স্মরণ করিয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপুমণি বলেন, “বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের মানুষ বসবাস করছেন। এখানে যার যার ধর্ম বা উৎসব পালন করছেন সবাই। তবে হাজীগঞ্জ বা অন্যান্য এলাকায় যে সাম্প্রতিক হামলা হয়েছে, তা আসলে জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখেই করা হয়েছে”।
হাজীগঞ্জে আওয়ামী লিগের তরফে আজ শুক্রবার সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে আর্থিক সাহায্য ও ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ওই অনুষ্ঠানেই যোগ দেন বাংলদেশের শিক্ষামন্ত্রী দীপুমণি। ধর্মনিরপেক্ষ মানেই ধর্মহীন রাষ্ট্র নয় সেই বার্তা দিতে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যের সাথেই সুর মিলিয়ে বলেছেন, প্রতিটি ধর্মের মানুষই স্বাধীনভাবে তাঁদের ধর্মীয় উৎসব পালন করবেন। কারুর তাতে বাধা দেওয়ার অধিকার নেই।
দুর্গাপূজোর সময় কুমিল্লার মূর্তি ভাঙা ও অন্যান্য হিংসামূলক ঘটনাকে পরিকল্পিত বলেই মনে করা হচ্ছে। এ বিষয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত চলছে বলেই জানালেন তিনি। প্রসঙ্গক্রমে ৭১ সালের উদাহরণ তুলে শিক্ষামন্ত্রী নাম না করে পাকিস্তানের উদ্দেশে বলেন, “আমরা দেখেছি একসময়ে ধর্মের নামে নির্যাতন হয়েছিল। একাত্তরেও তারা এমন করেছে, এখনও করে যাচ্ছে। এটা তাদেরই কাজ”।
পাকিস্তানকেই কার্যত ইঙ্গিত করে দীপুমণি ৭১এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসও স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, “আমরা মনে করি এখানে অশুভ শক্তির চেয়ে শুভ শক্তির মানুষের সংখ্যা বেশি। তাই আমরা সর্বশক্তি দিয়ে অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব। যেভাবে একসময় আমরা অসাম্প্রদায়িক দেশ গড়ার জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে মহান মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম”।
বাংলাদেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনার কথাই আরো একবার উজ্জ্বলভাবে তুলে ধরে এই বক্তব্যই রাখলেন শিক্ষামন্ত্রী।