কয়েকদিন আগে নিজের বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছেন প্রশান্তকিশোর। তিনি বলেন, “মোদী থাকুন বা না থাকুন, আগামী কয়েক দশক বিজেপিকে কেউ হারাতে পারবেনা”।
তৃণমূলের ভোট পরামর্শদাতা এই আমলার কথায় একদল উচ্ছসিত, কেউ কেউ কটাক্ষও ছুঁড়ছেন, কেউ ভেবে পাচ্ছেননা এই ভবিষ্যদ্বাণীর অর্থ কী! শেষপর্যন্ত এর একটা সর্বজনমান্য ব্যাখ্যা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
প্রসঙ্গত, শুধু তৃণমূল কংগ্রেসকে লক্ষ্য করেননি প্রশান্তকিশোর। কংগ্রেস তথা রাহুল গান্ধীকেও লক্ষ্য করে বলেন, “রাহুল সম্ভবত এই বিভ্রমে রয়েছেন যে মোদীকে দূরে সরিয়ে দেওয়াটা শুধু সময়ের অপেক্ষামাত্র। কিন্তু আপনি যদি তাঁর শক্তি পরীক্ষা না করেন তাহলে কখনোই আপনি তাঁকে হারাতে পারবেননা”।
কংগ্রেস যে সেটা করছেনা এই স্পষ্ট ইঙ্গিত করেই প্রশান্তের দাবি “হারুক বা জিতুক, কংগ্রেসের প্রথম রাজত্বকালের ৪০ বছরের মতো বিজেপিই ভারতীয় রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দু হতে চলেছে”।
তাহলে কি বিজেপিকে হারানো সম্ভব নয়? এই প্রশ্নের উত্তরই দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, “প্রশান্তকিশোরের মন্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। উনি আসলে বলতে চেয়েছেন কংগ্রেসের মতো একা একা নয়, বিজেপিকে হারাতে গেলে সকলকে একসঙ্গে লড়তে হবে। তবেই বিজেপিকে হারানো যাবে”।
মমতার এই বক্তব্যে কেউ কেউ হয়তো বিদ্রুপ করে চাটনি চাটবেন। কিন্তু তাদের উদ্দেশ্যে প্রশান্তকিশোরের বাকি কথাগুলোও প্রণিধানযোগ্য।
“আমি দেখতে পাচ্ছি, বেশিরভাগ লোকই এটা নিয়ে ভাবছেননা মোদী কেন এত জনপ্রিয় হয়ে উঠছেন! এই বিষয়গুলো জানলে, তাঁর শক্তি আন্দাজ করতে পারলে তবেই একমাত্র তাঁকে হারানো সম্ভব”।
যদি নিক্তিতে রেখে মাপা যায়, তবে মমতার হাল্কা চালে বলা কথাগুলোও বেশ ভারি মনে হতে শুরু করবে — মমতা ব্যানার্জীকেই একমাত্র শক্তিশালী বিরোধী শক্তি মনে করার জন্যেই সম্ভবত যা কেউ ভাবেনি সেই সিপিএম নেতাদের একাংশের গলাতেও তৃণমূলের সাথে জোটে যাওয়ার বেসুরো সুর বেজে উঠেছে।
জোট যদি শক্তিশালী না হয়, তাহলে হয়তো প্রশান্তকিশোরের পাঞ্চজন্যই সত্য হয়ে ধ্বনিত হতে পারে! রাজনৈতিক পরিস্থিতি ক্রমাগত সে ইঙ্গিতই দিয়ে চলেছে। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকে এমনটাই মনে করছেন।