কে যে কখন বিভীষণ হয়ে অন্য দলে পালিয়ে যাবেন তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। সেই বিভীষণ আবার নিজের ঘরেই ফেরত যাচ্ছে এই ট্রেন্ডও চালু হয়েছে ইদানিং। ফলে রাজনৈতিক মহলে সন্দিহান কিছু চোখ ঘুরছে এই জিজ্ঞাসা নিয়ে — কে যায়, কে যায় ? এবার কার পালা!
বাবুল, জিতেন্দ্রর পর উঠে আসছে আরও একটা নাম, যাওয়ার জন্য গাড়িতে স্টার্ট যেন দিয়েই রেখেছেন — তিনি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ইনিও ‘ওপাড়ার প্রাঙ্গণ’ থেকেই এপাড়ায় এসেছিলেন। অর্থাৎ তৃণমূল ছেড়ে যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে। সেটা গত বিধানসভা নির্বাচনের আগে।
যথারীতি সুস্বাগতম বলে অভ্যর্থনা করে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়কে ডোমজুড়ে প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করায় বিজেপি। কিন্তু সেই ‘বিভীষণ ভীষণ রণে’ বিভীষণ রাজীব গোহারা হারেন।
তাই বিজেপির সাথে সম্পর্কে চিড় ধরে গোড়াতেই। সম্প্রতি বিজেপিতে থেকেও তিনি বিজেপি বিরোধী মন্তব্য করছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। এমনকি তাঁর ঘর থেকে নেমপ্লেটও সরিয়ে দিয়েছে বিজেপি দফতর।
নির্বাচনে হারা প্রসঙ্গে তিনি বিজেপির বিভেদ মূলক নীতিকেই দায়ী করেছেন। মমতা ব্যানার্জীকে কথায় কথায় বিরোধী দল ‘খালা’ ‘বেগম’ এসব বলে সম্বোধন করে, তার ঘোরতর বিরোধী রাজীব। স্পষ্টতই বলেছেন , পশ্চিমবাংলার মানুষ যে মহামান্য নেত্রীকে ২১৩ টি আসন দিয়ে সম্মান জ্ঞাপন করেছে, তাঁকে এভাবে ছোট করা শোভনীয় নয়।
একথা তিনি গোড়া থেকেই বলে এসেছেন। কিন্তু দল শোনেনি। বিজেপির এই ধর্মীয় বিভাজনের রীতি নীতি ও আচরণ বাংলার মানুষ ভালো চোখে দেখেনি এমনটাই বিশ্বাস রাজীবের।
উপনির্বাচন সম্পর্কে মতামত কী? জানতে চাওয়ায় রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, “বিজেপি ভবানীপুরে প্রার্থী না দিলেই ভালো করত”। কারণ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের দৃঢ় বিশ্বাস — ভবানীপুরে মমতা ব্যানার্জীই জিতবেন।
বাবুল সুপ্রিয়র দলত্যাগের কারণ যে দিলীপ ঘোষ, সেটা বাবুল প্রকাশ্যেই বলেছিলেন। রাজীব যদিও বিজেপির কোনো ব্যক্তিনেতৃত্বের দিকে আঙুল তোলেননি। রাজীবের দলের প্রতি উষ্মা সম্পূর্ণটাই আদর্শ এবং নীতিগত। রাজীবের কথা থেকে সেটাই আন্দাজ করা যাচ্ছে।
তবে এইসব মন্তব্যের পরে তিনি বিজেপিতেই থাকবেন কিনা, অথবা বিজেপি তাঁকে দলে রাখবে কিনা, না রাখলেই বা তিনি কোথায় যাবেন সেটা আপাতত ধোঁয়াশায়।