সম্প্রতি বলিউড নায়িকা সানি লিওনের নতুন মিউজিক ভিডিও ‘মধুবন মে রাধিকা নাচে’ ঘিরে প্রবল আপত্তি তুলল মধ্যপ্রদেশের বিজেপি সরকার। ‘রাধা’ সম্পর্কিত এই গানে খুল্লামখুল্লা পোশাক পরে নেচেছেন নায়িকা সানি, যা হিন্দু ধর্মের ভাবাবেগে আঘাত করেছে বলেই দাবি করেছেন মধ্যপ্রদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র। শুধু তাই নয়, গানটির নৃত্যশিল্পী সানি লিওন এবং প্রযোজক সংস্থা সারেগামা-কে স্পষ্ট হুমকি দিয়ে ৭২ ঘন্টা সময় দেওয়া হয়েছে, এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে নেটমাধ্যম থেকে গানটি সরিয়ে নিতে হবে!
স্বাভাবিক ভাবেই মিউজিক ভিডিওর নাম এবং গানটির কথা বদলাবার ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছে প্রযোজক সংস্থা সারেগামা। প্রসঙ্গত, এই গানটি পুরোনো। ১৯৬০ সালের হিন্দি চলচ্চিত্র ‘কোহিনূর’ ছবিতে গানটি ব্যবহার করা হয়েছিল। ধ্রুপদী আঙ্গিকে মহম্মদ রফির গাওয়া গান ‘মধুবন মে রাধিকা নাচেরে’ সেই থেকেই জনপ্রিয়। সম্প্রতি নতুন ঢঙে গানটির কথা ব্যবহার করে নতুন মিউজিক সম্বলিত রিমিক্স ভার্সন প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু আপত্তি রিমিক্স নিয়ে নয়।
এই মিউজিক ভিডিওয় সানি লিওনকে উত্তেজক খোলামেলা ড্রেসে নাচতে দেখার ফলেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন মথুরার পুরোহিত সম্প্রদায়। ‘রাধা’-কে জড়িয়ে এই মিউজিক ভিডিওকে পুরোহিতরা অশালীন তকমা দিয়েছেন। অবিলম্বে গানটিকে নিষিদ্ধ করার দাবি তোলা হয়েছে। তাঁদের দাবিকে সমর্থন করেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নরোত্তম মিশ্র হিন্দুদের ধর্মীয় আবেগে আঘাত করছে এই কারণ দেখিয়ে সারেগামা-র মিউজিক ভিডিওটি প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছেন।
উল্লেখ্য,এই গানে সরাসরি কোনও ধর্মীয় উক্তি বা বিশ্বাসের অপব্যবহার অথবা মন্দিরকে অপবিত্র করে এমন দৃশ্য ব্যবহৃত হয়নি। গানের কথার সাথে নায়িকার পোশাক এবং নাচের বিভঙ্গকেই অশালীন বলে মনে করা হয়েছে। তবে একটা বিতর্ক থাকছেই। শিল্পসচেতন বুদ্ধিজীবিদের একাংশের মনোভঙ্গি এই বিতর্ক তুলছে।
‘বিদ্যাপতি’র তুলনা টেনে তাঁরা প্রশ্ন রাখতে চাইছেন ‘পদাবলি’র বিবরণ নিয়ে মথুরার পুরোহিতদের বক্তব্য কী? বিশেষ করে যেখানে রাধার অঙ্গসৌষ্ঠবের বর্ণনা রয়েছে! নরোত্তম মিশ্র সেইসময়ে উপস্থিত থাকলে বিদ্যাপতিকেও banned ঘোষণা করতেন কি? গান নিয়ে কেউ কেউ আপত্তি তুলতেই পারেন, কিন্তু এর সাথে ধর্মীয় ভাবাবেগের সম্পর্ক কোথায়? এই প্রশ্নগুলোই অমীমাংসিত থেকে যাচ্ছে।