VoiceBharat News images 98 3

শ্রীজাত কোন পক্ষে, ডান নাকি বাম? আদৌ কি তিনি প্রচলিত রাজনীতি মেনে চলেন! প্রশ্নগুলো অনেকেরই । সম্প্রতি এক বিপুল জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যমের সাক্ষাৎকারে নিজের রাজনৈতিক অবস্থান জানালেন তরুণ কবিদের আইকন শ্রীজাত। একই সঙ্গে জানালেন, কেন পদবি ব্যবহার করেননা তিনি।

VoiceBharat News 1635670315 srijato
ছবি :- সংগৃহীত


ওই সাক্ষাৎকারে কোনও রাখঢাক না করেই একজন শব্দশিল্পী হিসেবে নিজের রাজনৈতিক মত ব্যক্ত করতে গিয়ে শ্রীজাত বলেন, “আমি দীর্ঘদিন ধরেই রাজনীতি করি। প্রত্যেক শিল্পীরই একটা রাজনীতি আছে। আসলে রাজনীতি শব্দটা ক্যাবিনেটের সাথে একাত্ম করে ফেলেছি আমরা। রাজনীতি মানেই কিন্তু ক্যাবিনেট বা দল নয়। রাজনীতি একটা বৃহত্তর বিষয়”।


শ্রীজাত জানান এই রাজনীতি তাঁর কবিতা, গান, গল্পে উপন্যাসেই বুনে রাখা আছে। পাশাপাশি শ্রীজাত বলেছেন, “আমার রাজনীতি কী তা এককথায় বলা মুশ্কিল। আমার রাজনীতি সমস্তরকম বিভেদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে চায়। তাই সমস্তরকম বিভেদের বিরুদ্ধেই নিজের অবস্থান জাহির করেছি। ভবিষ্যতেও করব”।


একদিকে যেমন তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়েছেন, তেমনই বিতর্কও কম হয়নি তাঁর লেখাকে ঘিরে। ২০১৭ সালে কবিতার পংক্তিতে “ধর্মের ত্রিশুলে কন্ডোম” লেখার কারণে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন ধর্মের ধ্বজাধারীরা।

VoiceBharat News IMG 20211103 181506
সেই বিতর্কিত কবিতা

তাঁর ছবিতে অভিযোগ লিখে ছড়িয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। শানানো হয় হিন্দু ফতোয়া, প্রাণনাশের হুমকি। শিলচরের এক অনুষ্ঠান মঞ্চে উঠে তাঁর হাত থেকে মাইক কেড়ে নিয়ে প্রশ্নের পর প্রশ্নে বিদ্ধ করা হয়। ফেসবুকে কবিতা লেখা নিয়েও চলেছিল বিবাদ। শ্রীজাতই প্রথম, যিনি বাংলা কবিতা নিজের ওয়ালে পোস্টিয়ে দেখিয়ে দেন সোশ্যাল মাধ্যমকে ব্যবহার করেও একরকম ভাবে কবিতা ও পাঠকের মধ্যে সংযোগ তৈরি করা যায়।

VoiceBharat News IMG 20211103 182049
নমুনা ছবি:- সংগৃহীত (ইন্টারনেট)

তেমনই একদল কটাক্ষও করেন, ‘কেউ ছাপায়না তাই ফেসবুকে লেখে’। যদিও এ কটাক্ষ সর্বাংশে ভুল। এই লেখার কারণেই শ্রীজাতর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নিষিদ্ধও হয়েছিল। সেকথাও জানালেন শ্রীজাত। আর তখনই ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে তাঁর পাসপোর্ট দেখানোর প্রয়োজন পড়েছিল, যার ফলে জনসমক্ষে ‘বন্দ্যোপাধ্যায়’ পদবি প্রকাশ হয়ে পড়ে।

এছাড়া খুব প্রয়োজন না হলে নামের সাথে পদবি জোড়েননা কবি শ্রীজাত। কারণটাও পরিস্কার জানিয়েছেন, “কোন মানুষ কোন জাত বা সম্প্রদায় থেকে আসছেন তা এই পদবি দিয়ে নির্ধারিত হয়। আমি তো এই বিভেদে বিশ্বাস করিনা, আবার এই বিভেদ আমি তুলেও দিতে পারবনা। আমি শুধু আমার পদবিটুকুই তুলে দিতে পারি”।

অর্থাৎ নিজেকে হিন্দু ধর্মের উচ্চবর্ণ বোঝাতে অনিচ্ছুক বলেই পদবি ব্যবহার করেননা শ্রীজাত। বিভেদের রাজনীতির বিরুদ্ধে এও এক নিজস্ব রাজনৈতিক অবস্থান বৈকি!

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com