১৯ ডিসেম্বর পুরভোটের আঁচে সাতসকালেই শহর কলকাতা সরগরম। তারই মধ্যে ভোট গ্রহণের প্রথম প্রহরেই একাধিক বুথে ঘটে গেল কয়েকটি ঝামেলার ঘটনা। কোথাও সিসিটিভি ঢেকে দেওয়ায় ঘটনা, কোথাও ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ। বিভিন্ন এলাকায় বিচ্ছিন্নভাবে প্রায় সবকটি পার্টির বিরুদ্ধেই অভিযোগ উঠেছে। তবে সবাইকে ছাপিয়ে গিয়েছে বিজেপির শান্তিপূর্ণ অভিনব ভোট টানবার প্রচেষ্টা। বিরিয়ানি খাইয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে বিজেপির বিরুদ্ধে।
১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে বামপ্রার্থী শিখা পূজারিকে বুথে বসতে বাধা দেওয়া হয়। ওদিকে ১০১ নম্বরের কেন্দুয়া হাইস্কুলে আবার জোর করে বুথদখলের অভিযোগ। অভিযুক্ত কোন দল, স্পষ্ট নয়, দুই ক্ষেত্রেই রিপোর্ট তলব করল নির্বাচন কমিশন।
সাতসকালেই খান্না হাইস্কুলের সামনে বোমাবাজি, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস ও তৃণমূলে মারামারি লেগে যায়। উল্লেখ্য, এই পুরনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়োগের দাবি করে বিজেপি আদালতের দ্বারস্থ হলেও সেই দাবি নাাকচ করে দেয় হাইকোর্ট। রাজ্যপুলিশই যথেষ্ট এমনটাই দাবি করে নির্বাচন কমিশন। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্রও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, ‘ভোট অবাধে হবে। কোনও সমস্যা হবেনা। কলকাতা পুলিশ অত্যন্ত প্রফেশনাল ফোর্স। আগেও তারা সুুষ্ঠুভাবে ভোট করিয়েছে।’
সেইমতোই কলকাতা পুরভোটে ২৩,০০০ পুলিশ ফোর্স মোতায়েন করা হয়। ২০০ টি জায়গায় পুলিশ পিকেটিংয়ের ব্যবস্থা। এছাড়াও ১৮ টি জরুরি টিম নিয়োজিত। তা সত্ত্বেও এদিন বিচ্ছিন্ন ঝামেলা এড়ানো যায়নি।
১০৯ নম্বর বুথে নিয়ম বহির্ভূতভাবে একজনের ভোট অন্যজন দেওয়ার ছবি ধরা পড়ে যায়। এক বৃদ্ধা চোখে কম দেখেন, এই কারণ দেখিয়ে এক তরুণী ওই বৃদ্ধাকে সঙ্গে করে ইভিএম মেশিনে গিয়ে ভোট দিয়ে আসেন।
খান্না হাইস্কুলের বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা আড়াল করার অভিযোগ ওঠে, কিন্তু প্রিসাইডিং অফিসার তা মানতে চাননি। গড়িয়ায় ১১০ নম্বর ওয়ার্ডের সিপিএম এজেন্টকে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে বামপ্রার্থী তনুশ্রী মন্ডল শাসকদল তৃণমূলের দিকে অভিযোগ তুলেছেন।
এদিকে ২২ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা দেবনাথকে হুমকি দিয়ে ভয় দেখিয়ে বুথে ঢুকতে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বিজেপি প্রার্থী মীনা পুরোহিতের বিরুদ্ধে।
তেমনই একবছর কলকাতা পুরনির্বাচনে ভোটার টানার অভিনব চেষ্টা করেছে বিজেপি, বিরিয়ানি খাওয়ানোর ব্যবস্থা করে, সেটাও আবার একটি বেসরকারি হাসপাতালের ছাদের ওপরে। সংবাদ সূত্রে খবর প্রকাশ পাওয়ামাত্রই শোরগোল পড়ে যায়। স্বভাবতই জেরার মুখে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ভোটার টানার জন্য মানিকতলার একটি বেসরকারি ছাদে বিরিয়ানি রান্না করাচ্ছে বিজেপি, তৃণমূল কংগ্রেস এমনই অভিযোগ তুলেছিল। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায় অভিযোগটা সত্যি।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, এই রান্না হাসপাতালের রোগীদের জন্যই রান্না করানো হচ্ছে। হাসপাতালের রোগীদের জন্য বিরিয়ানি! তথ্যটা ছোট্ট শিশুর পক্ষেও বিশ্বাস করা কঠিন। তাই বিরিয়ানির দায় বিজেপির দিকেই।