এবার স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোতে আয়োজিত হল জাতিসংঘের ২৬ তম বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন। আর সেখানেই ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা শূন্যে নামিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। যা নিয়ে একদিকে যেমন উঠেছে প্রশংসা তেমনই সমালোচনায় দ্বিধা বিভক্ত দেশের জনগণ।
আলোচনায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০৫০ সালের মধ্যে জলবায়ুতে কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে আনা। আলোচনার প্রথম ভাগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এই লক্ষ্যপূরণ কার্যত অসম্ভব বলেই ইঙ্গিত করেছিলেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের অন্তর্গত উন্নত দেশগুলি যেখানে যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস তুলে ধরতে পারছিলেননা, সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বের দরবারে এমন ঘোষণা যথেষ্ট গৌরবের বলেই মনে করছেন জনগণের একাংশ।
আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেছেন ২০ বছর বেশি সময় চাওয়া নিয়ে। একাংশ আবার এমন প্রতিশ্রুতি দেওয়াটাই সংশয়ের চোখে দেখছেন। তাঁদের মতে, ‘নেতা মন্ত্রীরা প্রতিশ্রুতি তো দেন অনেক কিছুই! বাস্তবে তার অর্ধেকও রূপায়িত হয়না। ভারতের মতো একটি দেশে ২০৭০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ‘শূন্যে’ নামানো আদৌ কি সম্ভব?’
তবে মতভেদ যাই থাকুক, প্রধানমন্ত্রীর এই সগর্ব ঘোষণার পরে চিন তাদের সময়সীমা নিয়েছে ২০৬০ সাল এবং যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় দেশসমূহ ২০৫০ এর মধ্যেই বাতাসে কার্বন নিয়ন্ত্রণ করবে বলেই দাবি করেছে।
কিসের ওপর নির্ভর করে নরেন্দ্র মোদী অমন অসম্ভব প্রতিশ্রুতি দিলেন? তার একটা বড় কারণ ভারতের কয়লার ওপর নির্ভরতা, যা সহজে হ্রাস পাবেনা। এছাড়াও অজীবাশ্ম শক্তির উৎপাদন বৃদ্ধি, তৎসহ ২০৩০ সালের মধ্যে বড় অংশের কার্বন বৃদ্ধি ঠেকানো, উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণ — এরকমই সম্মিলিত ৫টি টোটকা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী যাকে তিনি ‘পঞ্চামৃত’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
ব্যবসায়িক স্বার্থ রক্ষার খাতিরে বিশ্বের উন্নত দেশগুলি যেখানে পরিবেশকে গুরুত্বহীন বলে ভেবে এসেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেখানে দাঁড়িয়েই পরিবেশকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা জোরের সাথে ঘোষণা করলেন। এবার সেটা কতদূর বাস্তবায়িত হয়, সেটা সময়ই বলবে।