আমেরিকার ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় অর্থনীতি বিষয়ে তাঁর এক সুনিপুণ বক্তৃতায় প্রাক্তন মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণ্যম ‘অভূতপূর্ব অধিকার’ প্রসঙ্গে এমন দুই ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর উল্লেখ করেছেন। যাঁদের দু’জনেরই নামের আদ্যক্ষর ইংরেজি বর্ণমালার প্রথম অক্ষরটি দিয়ে যথাক্রমে ‘অম্বানী’ এবং ‘আদানি’। সুব্রহ্মণ্যম এই দুই বণিক গোষ্ঠীর অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রাধান্য বিস্তারের বিষয়টিকে ‘বিশ্বের ধনতন্ত্রের ইতিহাসে এক অনন্য ঘটনা’ বলে বর্ণনা করেছেন।
সন্দেহ থাকার কথাই নয় যে অম্বানী এবং আদানী, এরা উভয়েই বাণিজ্য-দক্ষ। কিন্তু তেমন দক্ষতা তো অন্য অনেক গোষ্ঠীরই রয়েছে। তবে কোথায় এই দুই গোষ্ঠী আলাদা? এরা সকলের চাইতে পৃথক যে জায়গাটিতে সেটি হল দেশের অর্থনীতির উপর প্রভুত্ব স্থাপনের জন্য এদের উদগ্র বাসনা। অম্বানী গোষ্ঠী পেট্রো কেমিক্যালসের জগতে তাদের আধিপত্য চায়,সঙ্গে চায় পেট্রোলিয়ায়ম, টেলিকম, অনলাইন মঞ্চসমূহ, সুবিন্যস্ত খুচরো ব্যবসা, এমনকি এও চায় যে বিনোদন জগতের উপরেও ছড়ি ঘোরাতে।
অতি দ্রুত গতিতে উঠে আসা আদানি গোষ্ঠী দীর্ঘকাল ধরেই এ দেশের কয়লা রফতানিকারক হিসেবে শীর্ষস্থানে রয়েছে। তারা সৌরশক্তি-সহ দেশের অন্যান্য শক্তি উৎপাদনক্ষেত্রে সব থেকে বড় বেসরকারি উদ্যোগ।তাঁরা দেশের প্রবেশ দ্বারগুলি, অর্থাৎ বৃহৎ বন্দর ও বিমানবন্দরগুলিরও মালিক। লক্ষণীয় বিষয় হল এই বিশেষ দুই গোষ্ঠী কিন্তু পরস্পরের জমিতে পা বাড়ায় না। কিন্তু ‘গ্রিন এনার্জি’ বা প্রাকৃতিক উপাদান থেকে আহৃত শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে দু’পক্ষেরই প্রাধান্য বিস্তারের চেষ্টা হয়তো সঙ্ঘাতের পথে ও যেতে পারে।
প্রাধান্য বিস্তারে অথবা রাজনৈতিক ক্ষমতার খেলায় দুই পক্ষ এখনও কেউই লিপ্ত হতে চায়নি।