একসময়ের বিজেপি কর্মী ছিলেন বাবলি মুখোপাধ্যায়। এখন এলাকায় ‘সমাজসেবী’ বলে পরিচিত। তার অদ্ভুত সমাজসেবার ধরণ প্রায়ই দেখতে পেত কৃষ্ণনগরের মানুষজন। যে কারণে বাবলি এখন জেলে।
বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরের লোকভর্তি বাসস্ট্যান্ডে এক ভিন্নধর্মী প্রেমিক প্রেমিকার চুল কেটে ফোন কেড়ে নিয়ে মারধোর শুরু করেন তিনি। তারপর সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দেন। ওই ভিডিওর সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার সরাসরি গিয়ে বাবলি মুখোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নদীয়ার কৃষ্ণনগর এলাকায় একটা সময় বিজেপির সমস্ত মিটিং মিছিলে দেখা যেত বাবলিকে। সেই নাম ভাঁড়িয়েই নীতিপুলিশ সেজে বসেছিলেন সমাজ সেবিকা বাবলি মুখোপাধ্যায়। পাড়ায় একটা অফিস খুলে রেখেছিলেন। তল্লাটের স্বামী-স্ত্রী ও পরিবারের ঝগড়ায় নাক গলিয়ে নিজে থেকেই সালিশি করে বেড়াতেন। তারপর সেইসব ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে নিজের প্রচার করে বেড়াতেন।
এদিন হাতেনাতে ধরা পড়ার পর বাবলির দাবি, “জানতে পেরেছিলাম ছেলেটির বয়স ১৮ করিমপুরে থাকে, আর মেয়েটির ১৪ বছর। মেয়েটার বাড়ি ব্যারাকপুরে। ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটি বাড়ি থেকে পালিয়ে এসেছে “। সেই কারণেই সারারাত তাদের আটকে রেখেছিলেন।
ঘটনাচক্রে ছেলে এবং মেয়ে দুই পরিবারের লোকজনই উপস্থিত ছিলেন। তাদের সকলের সামনেই, কোনো নিষেধ বা অনুরোধ না মেনে দুজনকেই মারধোর শুরু করেন। তারপর প্রকাশ্য ভিড়ের মাঝে তাদের চুল কেটে নেন। ফোন কেড়ে নেওয়া প্রসঙ্গে বাবলি বলেছেন , “ছেলেটির মোবাইলে মেয়েটির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছবি ছিল, তাই কেড়ে রেখে দিয়েছিলাম”।
বাবলি বোধহয় ভুলে গেছিলেন সমাজে ‘পুলিশ ‘ প্রশাসন-আইন এগুলো আছে। সেটাই তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলেন কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সুপার ঈশানি পাল। তিনি বলেছেন, “আমরা তদন্ত চালিয়ে ওই মহিলার বিরুদ্ধে মামলা রুজু করেছি”।
উল্লেখ্য, বাবলির বিরুদ্ধে সারারাত আটকে রাখা ও মোবাইল ছিনতাইয়ের মামলা দায়ের করা হয়েছে। আপাতত তিনি এক সপ্তাহ জেল হেপাজতে থাকবেন।
বাবলি মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে জানার জন্য স্থানীয় বিজেপি দলের সাথে যোগাযোগ করা হলে উত্তর নদীয়ার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদার বলেছেন, একসময় ওই মহিলা আমাদের দল করতেন ঠিকই, তবে নানা কারণে দুবছর হল দলের সাথে তাঁর কোনো সম্পর্ক নেই।