VoiceBharat News 348569 kanhaiya

“স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের অংশ নেওয়ার ঐতিহ্য রয়েছে, তাই দেশের স্বাধীনতা রক্ষায় এই দলকে শক্তিশালী করতে হবে।”
সুবক্তা কানহাইয়া কুমার সিপিআই ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দিয়ে কৈফিয়ত স্বরূপ এই কথাই বলেছিলেন। বেশ বোঝা গেল একটা কারণ তিনি দেখিয়েছেন। কিন্তু রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা কানহাইয়াকে প্রশ্ন করতে পারেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে সিপিআই দলের ভূমিকা কেমন ছিল, সেটা কি তিনি জানতেননা? তাহলে সেই দলে যোগ দিয়েছিলেন কেন?

আর সেই প্রশ্নই উস্কে দিতে পারে আরও এক প্রশ্নকে –ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে কংগ্রেসের ভূমিকা সম্পর্কেও তিনি বিস্তারিত কিছু জানেন কি?


এসব প্রশ্ন উঠছে, কারণ সম্প্রতি ইনস্টাগ্রামে নিজের বিলাসী যাপনের এক ছবি পোস্ট করেছেন কানহাইয়া কুমার। যেখানে দেখা যাচ্ছে এক বিলাসবহুল গদি মোড়া আরাম চেয়ারে পা টান করে বসে তিনি কবিতার বই পড়ছেন। যে ছবি নিয়ে ইতিমধ্যেই ‘হ্যাশট্যাগ মার্ক্সবাদ সে আজাদি’ শিরোনামে ট্রোল করাও শুরু হয়ে গেছে।

https://www.instagram.com/p/CVM6yuQPoTq/?utm_source=ig_web_copy_link


যারা ‘মার্ক্সবাদের’ উল্লেখ করে খোঁচা দিচ্ছেন কানহাইয়াকে, তাদেরও জেনে রাখা ভালো — এই লিস্টে প্রাক্তন কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়ার সদস্য হিসেবে কানহাইয়া কুমারই প্রথম নন। ওয়াকিবহাল মহল জানেন, কীভাবে ‘মার্ক্স’-কে ব্যবহার করে নিজেদের বিলাসবহুল জীবন সুনিশ্চিত করেছেন বেশ কিছু নামধারী রাজনীতিকরা।


তফাৎ হল কানহাইয়া রাজনীতির মঞ্চে নবীন, এবং অবশ্যই তাঁর প্রাক্তন দল সিপিআই তাঁকে মার্ক্স পড়তে উদ্বুদ্ধ করতে পারেননি, বরং নিজেদের ভরাডুবি থেকে বাঁচাতে টগবগে যুবকের গরম গরম বক্তৃতা দেওয়ার ক্ষমতাকে ব্যবহার করে এসেছেন। ঠিক যে কারণেই হয়তো নিজেদের অতীত ইতিহাস খুলে মেলে ধরেননি কানহাইয়ার কাছে, জানলে হয়তো নবীন নেতা আগেভাগেই পালাতেন! এমনই মনে করছেন ইতিহাস পড়া ব্যক্তিরা।


আজ এক বিলাসবহুল ঘরে আরামদায়ক যাপনের ছবি দিয়ে মার্ক্সবাদের বিপরীত এক ছবি দিয়ে কানহাইয়া কার্যত বুঝিয়ে দিলেন তিনি বেশ আছেন।

VoiceBharat News Kanhaiya Kumar 630x420 1
অতীতের লাল ঝান্ডাধারী কানহাইয়া


পাটনায় কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার সময় রাহুল গান্ধীকে প্রেরণাস্বরূপ রেখে তিনি বিজেপিকে “টুকরে টুকরে” করার ঘোষণা করেছিলেন। সেটা যে বিজেপির ব্যঙ্গের প্রত্যুত্তর ছিল সন্দেহ নেই। নিজেদের অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতিতে দেশের বৃহত্তর জাতীয় দল কংগ্রেসও লুফে নিয়েছে যুব আইকন কানহাইয়া কুমারকে, ঠিক যেমন লুফে নিয়েছিল সিপিআই। এই লোফালুফি খেলায় কানহাইয়া নামক এক ‘ঘুঁটি’ নিজের একটু স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজে নিলে কি এমন ক্ষতি!


নিজের এই সাম্প্রতিক বিতর্কিত ছবিতে উর্দু কবি বশির বদরের কবিতার পংক্তি উদ্ধৃত করেছেন কানহাইয়া–
“আমি চুপ করে থাকলে ভুল বোঝাবুঝি আরও বাড়ে, যা বলিনি সেটাও সবাই শুনে ফেলে”


তবে কি চুপ করে থেকে নিজের সম্পর্কে বিতর্ককেই প্রশ্রয় দিতে চাইছেন অতীতের লাল ঝান্ডাধারী অগ্নিস্ফূলিঙ্গ নেতা! নাকি অভিজ্ঞতায় বুঝে নিয়েছেন রাজনীতির পাশা খেলা! সেই দ্বন্দ্বেই দুলছে আর চুপিচুপি কানহাইয়ার গতিবিধি মাপছে রাজনৈতিক মহল।

By Partha Roy Chowdhury (কিঞ্জল রায়চৌধুরী)

Partha Roy Chowdhury (Bengali: কিঞ্জল রায়চৌধুরী) is staff journalist VoiceBharat News. email: kinjol@voicebharat.com