প্রায় ২ বছরের দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর অবশেষে ৩-রা ডিসেম্বর মুক্তি পেতে চলেছে আন্তর্জাতিক মানের বাংলা চলচ্চিত্র ‘মিশন একস্ট্রিম'(Mission Extreme)।
‘ঢাকা অ্যাটাক’ খ্যাত নায়ক আরিফিন শুভ অভিনীত এই ছবিটিকে আন্তর্জাতিক বলার বিভিন্ন কারণ আছে, যা ক্রমশ প্রকাশ্য। আগে জেনে নেওয়া যাক ছবিটির মেকিং সম্পর্কে।
সানী আনোয়ারের কাহিনী ও চিত্রনাট্য অবলম্বনে বাংলাদেশের পরিচালক ফয়সাল আহমেদ এবং সানী যৌথ পরিচালনায় তৈরি করেছেন এই অসামান্য পুলিশ অ্যাকশন থ্রিলার মুভি ‘মিশন এক্সট্রিম’। যার জন্য এক্সট্রিম সাসপেন্স নিয়ে দর্শক অপেক্ষা করে রয়েছেন। ছবিটির প্রযোজনা করেছে কপ ক্রিয়েশন।
এই ছবির কাহিনীকার সানী আনোয়ার নিজেই পেশায় পুলিশ সুপার! ছবিটি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ এবং কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের কিছু বাস্তব অভিযান অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে। ফলে গোটা ছবিতে টানটান উত্তেজনার সাথে বাড়তি আকর্ষণ তো থাকবেই! ছবিটির প্রযোজনায় সহায়তা করেছে মাইম মাল্টিমিডিয়া ও ঢাকা ডিটেকটিভ ক্লাব।
আরেকটি উল্লেখ্য বিষয়, এই ছবির মাধ্যমেই নায়িকা হিসেবে বড়পর্দায় ডেবিউ হতে চলেছে ‘মিস বাংলাদেশ’ জান্নাতুল ফেরদৌস ঐশি-র।
অক্টোবরেই ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিটির ট্রেলার মুক্তি পেয়েছে। টানটান রহস্যে ভরপুর, শ্বাসরুদ্ধকর ফাইট সিকোয়েন্স, রহস্যময় টাকা আর কিছু নাম্বারিং কোড, যুদ্ধের আগাম সংকেত, এসে পড়েছে এক যুদ্ধই, শত্রু অজানা, যুদ্ধে নামছেন আরিফিন শুভ! সারা শরীরে আগ্নেয়াস্ত্র! হাতে শাণিত ছুরি, চোখে খরতর দৃষ্টি, মূর্তিমান সুপার হিউম্যান পার্সোনালিটি! তারপর কী হয়!…জানার জন্য ছবিটি দেখতে হবে।
‘মিশন এক্সট্রিম’-এর নায়ক আরিফিন শুভ বাংলাদেশ সিনেমার জগতে বেশ পরিচিত নাম। ‘ঢাকা অ্যাটাক’ সিনেমায় শ্রেষ্ঠ অভিনয়ের জন্য জাতীয় পুরস্কার প্রাপ্ত এই অভিনেতার পরিচিতি দিতে গেলে বলে শেষ করা যায়না। দীর্ঘ ২১ বছরেরও বেশি অভিনয় জীবনে কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র জগতে নিজস্ব জায়গা করে নিয়েছেন এই নায়ক।
প্রথমে মডেলিং তারপর নাট্যমঞ্চে অভিনয়ের পর ২০১০ সালে ‘জাগো’ চলচ্চিত্রে বড়পর্দায় ডেবিউ। ‘পূর্ণ দৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী’-তে শাকিব খান ও জয়া আহসানের বিপরীতে খলনায়কের ভূমিকায় তাঁর দুর্দান্ত অভিনয় দর্শকদের নজর কেড়ে নেয়। ছুঁয়ে দিলে মন, অস্তিত্ব, সাপ লুডু একের পর এক ছবিতে প্রশংসিত অভিনয় করেছেন তিনি। ২০১৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত বিখ্যাত ছবি ‘ঢাকা অ্যাটাক’-এ অভিনেতা জাতীয় পুরস্কার পান। এছাড়াও মেরিল প্রথম আলো পুরস্কারে একাধিকবার বিজয়ী ও মনোনীত হয়েছেন।
তবে আসন্ন মুক্তি পেতে চলা ‘মিশন এক্সট্রিম’-এ দর্শক অন্য এক আরিফিন শুভকে দেখতে পাবেন, যার জন্য কঠোর পরিশ্রমে নিজের শরীরকে গঠন করেছেন শুভ। তৈরি করেছেন সিক্স প্যাক! শুধু তাই নয়, এই ছবির একাধিক ফাইট সিন ও ঝুঁকিপূর্ণ দৃশ্য স্টান্টম্যানের বদলে নিজে একাই করেছেন! ফলে ছবির গোটা ইউনিট এই ছবির সাফল্য সম্পর্কে ভীষণ উত্তেজিত প্রতীক্ষায় রয়েছেন।
এই ছবির কাজ নিঃসন্দেহে হলিউডের সমমান দাবি করে, ট্রেলার দেখে অনেকেই সেটা অনুমান করছেন। তাই এ ছবির আবেদন আন্তর্জাতিক ; শুধু তাই নয়, ‘মিশন এক্সট্রিম’ ছবিটি বাংলাদেশের সাথেই আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড সহ মোট ১১ টি দেশে একসাথে মুক্তি পেতে চলেছে।
আমেরিকার ডিস্ট্রিবিউশন সংস্থার কর্ণধার রাজ হামিদ জানিয়েছেন, “হলিউডের বিখ্যাত সিনেমাগুলির মতো নিউইয়র্কে ‘মিশন এক্সট্রিম’ এর প্রিমিয়ার শো হবে ৩রা ডিসেম্বর রাত ১২:০১ মিনিটে। আমরা এই ছবির মাধ্যমে কোভিড পরবর্তী পৃথিবীতে সকলকে স্বাগত জানাতে চাই”।
অক্টোবর মাস থেকেই নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ায় ছবির অ্যাডভান্স বুকিং আরম্ভ হয়ে গেছে। ফলে বাংলা ছবি মিশন এক্সট্রিম যে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে উজ্জ্বল নজির তৈরি করবে এমনটা আশা করাই যায়। এখন শুধু ছবি মুক্তির অপেক্ষা।