অন্যান্য দিনের মতো এদিনও দিলীপ ঘোষের সকাল শুরু হল রাজ্যের পুলিশ প্রশাসন এবং তৃণমূল সরকারকে কটাক্ষ করে। শুধু তাই নয়, গোয়ায় ঘোষিত মমতা ব্যানার্জির ‘গৃহলক্ষী প্রকল্প’ নিয়েও বিদ্রুপ করলেন তিনি।
বিধাননগরে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া তরুণীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় সরাসরি পুলিশি ব্যবস্থার দিকে আঙুল তুললেন তিনি। পুলিশকে ‘ক্যাডার’ বলে উল্লেখ করে সরকারি মদতের ইঙ্গিত করেছেন দিলীপ ঘোষ। সংবাদ মাধ্যমে তিনি বলেন, “রাজ্যের তৃণমূল সরকার পুলিশকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে, এর জন্যেই পুলিশের মধ্যে কাজ করবার ইচ্ছা ও ডিসিপ্লিন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। শহরের রাস্তায় সাধারণ ঘটনায় সিভিক পুলিশ যেভাবে পাবলিককে মারধোর করছে, তাতে বোঝা যায় পুলিশও ক্যাডার হয়ে গেছে।”
উল্লেখ্য, শনিবার রাতে আসানসোল নিবাসী এক তরুণীকে উল্টোডাঙার পথে লিফট দেওয়ার নাম করে বাইকে বসিয়ে ছুটন্ত বাইকেই শ্লীলতাহানি করেন ট্রাফিক কমিশনারেটের এএসআই ও সিভিক ভলান্টিয়ার। এই ঘটনার ২৪ ঘন্টার মধ্যে পদক্ষেপ নিয়ে যাদের পরিচয় বার করে সাথে সাথে গ্রেপ্তার ও চাকরি থেকে বরখাস্ত করেছে পুলিশ কর্তৃপক্ষ। তাই এই ঘটনায় পুলিশকর্মীরা জড়িত থাকলেও, সরাসরি প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে দিলীপ ঘোষের এই আক্রমণকে পরিকল্পিত বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
পাশাপাশি এদিন নিজের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গোয়া সফর নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর মতে, “যেখানে পার্টিই শুরু হয়নি সেখানে গিয়ে নতুন নতুন প্রতিশ্রুতি দেওয়া হচ্ছে। ত্রিপুরায় চেষ্টা করেছেন, পারেননি এবার গোয়ায় গিয়ে লোভ দেখাচ্ছেন। বাংলার মানুষকে ভিখারি বানিয়েছেন, ভাবছেন গোয়ার লোকেরাও এরকমই।”
প্রসঙ্গত, গোয়ার এক সভায় তৃণমূল নেত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতায় এলে তিনি সাড়ে ৩ লক্ষ মহিলাকে প্রতিমাসে ৫০০০ টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেন। যে প্রস্তাব নিয়ে প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরম বলেছিলেন, ‘এই সহজ অঙ্কের জন্য নোবেল পাওয়া উচিত।’ সেই প্রসঙ্গই আরো একবার খুঁচিয়ে দিলেন দিলীপ ঘোষ।
কলকাতার পুরভোটের আগে কলকাতার ৬৮ নম্বর ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থী তনিমা চ্যাটার্জির দেয়াল লিখন মুছে দেওয়া এবং ব্যানার- পোস্টার ছেঁড়া নিয়েও দিলীপ ঘোষ তৃণমূলের দিকেই নিশানা ছুঁড়েছেন। সরাসরিই বলেছেন, “শুধু তনিমা চট্টোপাধ্যায় কেন, শহরের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপির ফ্লেক্স ছিঁড়ে দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া দিনেরবেলা বিজেপি কোথাও কোনও পতাকা লাগালে রাতের বেলা তৃণমূলের বাইক বাহিনী এসে খুলে নিয়ে যাচ্ছে।”
এমনই অভিযোগ তুলেছেন দিলীপ ঘোষ। যদিও সাম্প্রতিক অতীতে, ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে বিজেপির বিরুদ্ধেও এই একই অভিযোগ তুলেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।