সাধ অনেক থাকলেও সাধ্য কই? তৃতীয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার গঠনের পরে ভোট ইস্তেহারের ঘোষণা মতো লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্প শুরু করেছিলো রাজ্য সরকার। এক মাস ধরে দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে যা ফর্ম পড়েছিলো তার সিংহভাগ লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের জন্য।
কিন্তু নবান্নের ভাঁড়ারে অত টাকা কোথায়? এবার তাই অর্থের জোগানে অন্যত্র অপচয় রোখার সিদ্ধান্ত নিল রাজ্য সরকার। সে ব্যাপারে অনেক কিছু থাকলেও নবান্নের নজরে আপাতত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ‘রেশনের ভূত!’ ব্যাপারটা কী? খাদ্য ভবনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী রাজ্যে প্রায় সাড়ে দশ কোটি ‘অ্যাকটিভ রেশন কার্ড’ রয়েছে। নবান্ন মনে করছে, এই তালিকায় অনেকে আবার মৃত। তাঁদের রেশন কার্ড এখনও রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কেউ মারা গেলে তাঁর রেশন কার্ড সারেন্ডার করানোর দিকে পরিবারের লোকের নজর থাকে না। খাদ্য ভবনের কর্মীরা বলেন, রাজ্যে কুইন্টাল কুইন্টাল খাদ্য ভূতে খেয়ে যায়। অর্থাত্ পরিবারের লোক যে মৃত মানুষের রেশন কার্ড এনে মাল তুলে নিয়ে যায় এমন নয়। কিন্তু বরাদ্দ হিসেবে ডিলারের কাছে খাদ্যসামগ্রী যায়। কিন্তু তারপর কী হয় কেউ জানে না। নবান্নের এক আধিকারিকের কথায়, এই মৃত মানুষদের চেনার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। সরকারের সমব্যথী প্রকল্পের খাতার সঙ্গে রেশন তালিকা ট্যালি করার পরিকল্পনা নেয় নবান্ন।
নবান্নের এক আধিকারিকের কথায়, সরকার মনে করছে, ঠিকভাবে এই তালিকা করলে প্রতি মাসে সরকারের অনেক টাকা বাঁচবে । ২০১১ সালে রাজ্যের জনসংখ্যা ছিল ৯ কোটি ১৩ হাজার। তারপর আর জনগণনা হয়নি। কিন্তু বর্তমানে অ্যাকটিভ রেশন কার্ড সাড়ে দশ কোটি। নবান্ন সূত্রের খবর , রেশন দিতে প্রতি বছর রাজ্য সরকারের খরচ সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা। যে হারে ফর্ম পূরণ করে মহিলারা ক্যাম্পে জমা দিয়েছেন তাতে এই প্রকল্পে বছরে খরচ ২০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে । পর্যবেক্ষকদের মতে, আর্থিক টানের কারণে এই ভাবনা ভাবতে হবে সরকারকে। আপাতত নবান্নের নজরে ‘রেশনের ভূত!’