ইদানিং শাহরুখ- আরিয়ান -বলিউড ড্রাগস, এই শব্দগুলো বিনোদন জগতের প্রতিদিনের চর্চার বিষয়। উঠে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। এর মধ্যে আবার রাজনৈতিক যোগসুত্র আছে বলেও দাবি অনেকের। কিন্তু আরিয়ান কি সত্যিই মাদকাসক্ত ছিলেন? কোথা থেকে আসছে এই মাদক! পাচার করছেই বা কারা? কীভাবে? ভাবতে গিয়ে আমজনতার রোম খাড়া হয়ে উঠবে!
প্রসঙ্গত, কর্ডিলিয়া নামের এক প্রমোদ জাহাজে চলছিল মাদক পার্টি। মুম্বই থেকে গোয়াগামী ওই জাহাজে উপস্থিত ছিলেন শাহরুখ পুত্র আরিয়ান। সাধারণ যাত্রীর ছদ্মবেশে এনসিবি (Narcotic Control Beuro) অফিসার সমীর ওয়াঙ্খেড়ে ওই জাহাজে হানা দিয়ে আরিয়ান সহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেন। তার সূত্র ধরেই আরিয়ানের বান্ধবী মুনমুন ধামেচা, আরবাজ মার্চেন্ট সহ আরও ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনাস্থলে শাহরুখ পুত্রের উপস্থিতির ফলেই গোটা ব্যাপার নিয়ে হইচই পড়ে গেছে বলে মনে করছেন অনেকে। পাশাপাশি উঠে আসছে নানা প্রশ্ন। কীভাবে সরবরাহ হচ্ছে এই ড্রাগ?
প্রথমে যদিও শাহরুখপুত্র বলেছিলেন, বিশেষ অতিথি হিসেবে তাকে ওই পার্টিতে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। এর সঙ্গে ড্রাগস চক্রের সম্পর্ক আছে সেটা তিনি জানতেননা।
কিন্তু, আরিয়ানকে ঘন্টার পর ঘন্টা জেরা করে এবং তার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট খতিয়ে দেখে শ্রেয়স নায়েক নামের এক মাদক পাচারকারীর সন্ধান পাওয়া যায়। আটক ওই ব্যক্তির মতে মাদক কেনা হয়েছিল বিটকয়েনের মাধ্যমে। নগদ অর্থ মূল্যে নয়, মাদক নেওয়া হয়েছিল ‘ক্রিপ্টোকারেন্সি’ দিয়ে। কী এই ক্রিপ্টোকারেন্সি?
ক্রিপটোকারেন্সি এক ধরনের ভার্চুয়াল আর্থিক বিনিময় মাধ্যম। যার ফলে মূল সরবরাহকারী এবং যিনি ক্রেতা তাদের আসল পরিচয় গোপন থেকে যায়। স্বভাবতই ‘ডার্কওয়েব’এর সূত্রে আরও বড় কোনো মাদকচক্র জড়িত কিনা এনসিবি তার তদন্ত করছে। শাহরুখ পুত্রের আইনজীবী সতীশ মানশিন্ডের আবেদন অনুযায়ী আরিয়ান জামিন পাবেন কিনা তা শুক্রবার ঘোষণা করবে আদালত।
ইতিমধ্যেই বলিউড অভিনেত্রী শার্লিন চোপড়া করলেন আরো এক পর্দা ফাঁস। অতীতের এক অভিজ্ঞতার সূত্রে তিনি জানান ‘কেকেআর ‘ ম্যাচ জেতার পর এক পার্টিতে তিনি উপস্থিত ছিলেন। শাহরুখ খান এবং তাঁর পরিচিত বন্ধু বান্ধব সস্ত্রীক উপস্থিত ছিলেন সেই পার্টিতে। বেশ কিছুক্ষণ পার্টি চলার পর ধীরে ধীরে গোটা হল ধোঁয়ায় ধোঁয়ায় ভরে উঠতে থাকে।
এমনই সময় ওয়াশ রুমে গিয়ে তিনি দেখেন। ‘স্টার ওয়াইফ’রা আয়নার সামনে লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে সাদা পাউডার অর্থাৎ কোকেন নিচ্ছেন। অপ্রস্তুত অবস্থায় পড়ে বেরিয়ে আসেন তিনি। শাহরুখের পার্টিতে ‘স্টার ওয়াইফ’ বলতে তিনি কাদের উল্লেখ করতে চান তা স্পষ্ট না বললেও শার্লিন চোপড়ার এই বিবৃতি শাহরুখ এবং আরিয়ান প্রসঙ্গে নতুন বিতর্ক তুলে দিয়েছে।
ঠিক তার বিপরীতে আরিয়ান বিতর্কে বৃহস্পতিবার অন্যরকম এক ইন্ধন যোগালেন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা নবাব মালিক। গোটা ব্যাপারটায় মাদক নিয়ন্ত্রণ দপ্তর এনসিবিকেই দায়ী করে রাজনীতি যোগ করে দিলেন এর সঙ্গে। ফলে আরো জলঘোলা হল বিষয়। নবাব মালিকের মতে, ” মহারাষ্ট্র এবং বলিডের বদনামই এনসিবির লক্ষ্য”। তিনি আরও দাবি করেছেন, “প্রমোদ তরীতে যারা অভিযান চালিয়েছেন, তাদের মধ্যে মনীশ ভানুশালি নামের এক বিজেপি কর্মীও ছিলেন। এনসিবির অভিযানে কেন গেছিলেন ওই বিজেপি কর্মী?” প্রশ্ন করেছেন নবাব মালিক।
এছাড়াও মালিকের দাবি প্রথম যে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের সবাইকে কোর্টে হাজির করা হয়নি। এদের মধ্যে দুই বিজেপি ঘনিষ্ঠকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে, বলছেন ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির নেতা নবাব মালিক। ফলে বলিউড বিতর্ক এবং মাদকচক্রের সাথে রাজনৈতিক চক্রান্তের সম্ভাবনা, সব মিলিয়ে আরিয়ান ও শাহরুখ প্রসঙ্গকে আরো একবার নতুন মোড়ের দিকে ঘুরিয়ে দিল ।