বিজেপি বিরোধী জোট যতই আঁটোসাঁটো হতে চলেছে, ততই অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে বিজেপি দল। আর তাই সুযোগ বুঝলেই বিরোধীদের (পড়ুন – তৃণমূল বিরোধীদের) সমর্থন করে বসছেন দলের নেতারা।
সম্প্রতি আরামবাগে গিয়ে তৃণমূল বিরোধী বক্তব্যে এমনভাবেই সিপিএমকে সমর্থন করে বসলেন শুভেন্দু।
গত শনিবার ২ সেপ্টেম্বর বন্যা প্লাবিত আরামবাগ পরিদর্শনে গেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী। আর তার পরের মঙ্গলবারই আরামবাগে ত্রাণ দুর্নীতি নিয়ে তৃণমূলকে অভিযোগ করলেন বিজেপি দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বন্যা বিধ্বস্ত আরামবাগে ত্রাণ পৌঁছে দিতে গিয়ে শুভেন্দু বলেন, “আরামবাগের ৪ বিধানসভার বহু মানুষ ত্রাণ থেকে বঞ্চিত। বিশেষ করে বিজেপি সমর্থকদের ত্রাণ দেওয়া থেকে নির্লজ্জ ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে “।
বেছে বেছে বিজেপি সমর্থকদের ত্রাণ না দেওয়ার অভিযোগ তুললেও কোন ৪ বিধানসভা সে উল্লেখ অবশ্য তিনি করেননি। কিন্তু নিজের অতীতের রাজনৈতিক অবস্থানের ধুয়ো তুলে বামফ্রন্টের দিকে প্রশংসার ইঙ্গিত করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন স্পষ্টতই অতীতের স্মৃতি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমি বামেদের আমলেও কাউন্সিলর ছিলাম, বিধায়ক ছিলাম সাংসদ ছিলাম তখন এমন ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতি দেখিনি”।
এইভাবে বামেদের ইমেজ ক্লিন করে আসলে যে শুভেন্দু নিজের নিরপেক্ষ অবস্থান স্বচ্ছ রাখতে সচেষ্ট, তা বুঝতে অসুবিধা হয়না।
দলবাজির রাজনীতি নিয়ে তৃণমূলকে আক্রমণ করতে গিয়ে তিনি নন্দীগ্রামের নিজের লড়াইয়ের কথাও মনে করিয়ে দিয়েছেন। সেটাই কি ছিল নন্দীগ্রামের মাটিতে মমতা ব্যানার্জীকে হারিয়ে শুভেন্দুর জেতার কারণ? ইঙ্গিত সেদিকেই।
কিন্তু যে দলের মাটিতে একসময় তৃণমূলের ঝান্ডা হাতে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে লড়েছেন, আজ সেই বামেদের দিকেই প্রশংসার ঝোল টেনে তিনি বলেছেন ,”এখন তৃণমূল সরকার যে দলবাজি করছে, বিগত দিনে কোনো সরকারই করেনি”।
এখানেই থামেননি শুভেন্দু। ঘাটাল মাস্টার প্ল্যানে আরামবাগের নাম না থাকার উল্লেখ করেছেন। শুধু তাই নয়, ২ তারিখ আরামবাগের বন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শন যে লোকদেখানো সেই উল্লেখ করেও মুখ্যমন্ত্রীকে বিঁধেছেন। বলেছেন, “মুখ্যমন্ত্রী শুকনো ডাঙায় দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ করে জলে নেমে জুতো ভিজিয়ে ছবি তুলে চলে যান”।
কার্যত এভাবেই মুখ্যমন্ত্রীকে কোণঠাসা করতে চেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী।
ডিভিসির জল ছাড়ার আগাম বার্তা যে দেওয়া হয়েছিল, তৃণমূলকে “অপদার্থ সরকার” বলে জনগনকে সচেতন না করার অভিযোগও আরও একবার তুলে বন্যার জন্য রাজ্য সরকারের দিকেই আঙুল তুলে দিয়ে গেলেন প্রাক্তন তৃণমূল সৈনিক বাম বিরোধী নিরপেক্ষ বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।