‘জয় শ্রীরাম’ শ্লোগানকে কেন্দ্র করে বিতর্ক প্রচুর হয়েছে। এবার বিতর্কের কেন্দ্রে সীতা। সীতার পাতাল প্রবেশ কেন? এই মন্তব্যের ফলে পুলিশের জেরার মুখে পড়লেন তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুনাল ঘোষ। আর প্রশ্নোত্তর পর্বের জন্য একেবারে প্রস্তুত হয়ে ‘রামায়ন’ বগলে নিয়েই থানায় ঢুকলেন কুনাল। এই ঘটনায় হঠাৎ অপ্রস্তুত ত্রিপুরার বাগমা ফাঁড়ির পুলিশ মহল।
উল্লেখ্য, কিছুদিন আগেই কুনাল ঘোষের ট্যুইট থেকে জানা গেছে ‘জয় শ্রীরাম কোনও রাজনৈতিক শ্লোগান নয়’ এই উক্তির জন্য মাঝরাতে পুলিশি শমন আসে। ওই বক্তব্যের পাশাপাশি তিনি আরো বলেছিলেন, ‘শুধু শ্রীরাম কেন, সীতার পাতাল প্রবেশের যন্ত্রনাটাও সাধারণ মানুষ মনে রাখুন’।
এছাড়াও ত্রিপুরার এক সভায় কুনাল প্রশ্ন তুলেছেন, “রামরাজ্যে সীতা কেন পাতাল প্রবেশ করেছিলেন? ” আর এরপরই বিতর্ক আরো জোরালো হয়েছে। একটি মামলা তো ছিলই, বুধবার আরো চারটি মামলা রুজু হয় কুনাল ঘোষের বিরুদ্ধে। শমন পেয়ে বৃহস্পতিবার আগরতলার বাগমা ফাঁড়িতে হাজিরা দেন কুনাল ঘোষ। তবে এবার খালি হাতে যাননি। সঙ্গে করে নিয়ে গেলেন বাল্মীকির মূল রামায়ণ, নৃসিংহ প্রসাদ ভাদুড়ি ও নবনীতা দেবসেনের লেখা রামায়ন সম্পর্কিত দুটি বই এবং অক্সফোর্ড প্রকাশিত রামায়ণ নিয়ে কিছু গবেষণা পত্র। এসব নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে যখন পৌঁছন কুনাল, উপস্থিত পুলিশ মহলের চোখ কপালে ওঠার জোগাড়!
এরপর টানা দেড় ঘন্টা ধরে পাঁচটি থানার তদন্তকারী পুলিশ মিলিতভাবে জেরা করেন তাঁকে। জেরা শেষে বেরিয়েই সংবাদ মাধ্যমের কাছে তিনি তাঁর বক্তব্য রাখলেন। কুনালের প্রশ্ন, “বিজেপি কেন জয় শ্রীরাম বলে তৃণমূলের ওপর হামলা করছে? ওরা রাম বললে আমি কেন মা সীতার অপমান ও পাতাল প্রবেশের কথা বলতে পারবনা?”
বইপত্র নিয়ে আসা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে কুনাল জোরালো দাবি তুলে বললেন ,”হয় রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহার বন্ধ হোক, নাহলে পুলিশই বলে দিক রামায়ণের কোন অংশটা ব্যবহার করা যাবে, আর কোনটা যাবেনা!”
তৃণমূল কংগ্রেসের দাবি, আসন্ন পুরভোটকে কেন্দ্র করেই বিপ্লব দেব সরকারের পুলিশ তাঁদের নানাভাবে হেনস্থা করতে চাইছে। তবে থানায় হাজিরা দিতে গিয়ে কুনাল ঘোষের এই পদক্ষেপ সাম্প্রতিক রাজনীতিতে বিরল দৃষ্টান্ত তৈরি করল।