দিল্লী সফরের রেশ কাটতে না কাটতেই মুম্বই। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দুরন্ত গতিতে ছুটছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। দুদিন আগেই দিল্লীতে কর্মসমিতির বৈঠক সেরেছেন। এছাড়াও তৃণমূলে যোগদান করিয়েছেন অশোক তানওয়ার, পবন বর্মা, কীর্তি আজাদ সহ তাবড় তাবড় ব্যক্তিত্বদের। হিন্দি অধ্যুষিত অঞ্চলে মমতার জনপ্রীতি চোখে পড়ারই মতো। এবার দিল্লী সফর শেষ করেই গতকাল মুম্বই পৌঁছে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যা, মুম্বইয়ের শিল্প সম্মেলনে আমন্ত্রিত অতিথি হয়ে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিখ্যাত সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে পূজো সারলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে তখন জনসমাগমও হয়েছিল বেশ। বঙ্গের মারাঠা প্রতিবেশিদের উদ্দেশ্যে মমতা বার্তা দিলেন, “এর আগে অনেকবার আসার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু সুযোগ হয়ে ওঠেনি। এখানকার মন্দিরের পুরোহিত ও ট্রাস্টের লোকেদের অজস্র ধন্যবাদ। এখানে সবার জন্য প্রার্থনা করেছি। সময় হলে আবারও আসবো।”
মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরের পুরোহিত ও ভক্তসমাগমকে লক্ষ করে মমতা জয়ধ্বনি দেন,”জয় মারাঠা! জয় বাংলা!”
‘জনগণমনে’ বাংলা ও মারাঠার সম্পর্কের সূত্র এদিন আরো একবার স্মরণ করিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মহারাষ্ট্রে মমতার আবির্ভাব একেবারেই তাৎক্ষণিক নয়। বরং এর পেছনে যথেষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। ইতিমধ্যেই দিল্লীর বৈঠকে তিনি আঞ্চলিক দলগুলির সাথে সম্পর্ক তৈরির উল্লেখ করেছেন। বাড়ছে কংগ্রেসের সাথে দূরত্বও। দিল্লী সফরে সনিয়া গান্ধীর সাথে এবার দেখা করেননি মমতা। এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে উল্টে শ্লেষাত্মক ভঙ্গিতে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন “দিল্লী এলেই সনিয়া গান্ধীর সাথে দেখা করা কি বাধ্যতামূলক?”
ঠিক তার পরেই মুম্বইতে এসে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরের সাথে দেখা করার আগাম পরিকল্পনা নিয়ে রেখেছিলেন মমতা, তবে উদ্ধব ঠাকরের শারীরিক অসুস্থতার কারণে দেখা করা গেলনা বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। তবে উদ্ধব পুত্র আদিত্য ঠাকুরের সঙ্গে দেখা করবেন বলেই জানান তিনি। পাশাপাশি এদিন এনসিপি দলের প্রধান নেতৃত্ব শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দেখা করার কথাও মুম্বই বিমানবন্দর থেকেই ঘোষণা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আঞ্চলিক দলগুলির সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের উদ্দেশ্য কি ভবিষ্যতে বিজেপি বিরোধী জোটেরই আগাম প্রস্তুতি!
রাজনৈতিক মহলের একাংশ সেই সম্ভাবনাই দেখছেন।