হাওয়া ভালো নয়। কোনও রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বই আর সহনেতাদের বিশ্বাস করে উঠতে পারছেননা। কে যে ফাঁকতাল বুঝে অন্য দলে পালায় তার বিন্দুমাত্র গ্যারান্টি নেই। এই যখন পরিস্থিতি, তখন শুভেন্দুর সাথে সুজনের আলাপচারিতা দেখে রাজনীতির লোকজন ভড়কাবেন বৈকি! আর ঠিক সেটাই ঘটল, এটা অবশ্য কোনো ‘টেকনিক্যাল ফল্ট’ নয়, একেবারে রিয়্যাল লাইফেই লাইভ সাক্ষাৎ ঘটে গেছে।
প্রসঙ্গত, গতকাল একটি প্রযুক্তির গন্ডগোলে সিপিএমের ফেসবুক পেজে তৃণমূল নেতার লাইভ ভিডিওর ছবি নিয়ে নেটদুনিয়ায় একচোট হল্লা হয়ে গেছে। প্রবল অস্বস্তির মুখে পড়ে ভীষণ চটে গিয়েছিলেন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের বাম নেতৃবৃন্দ। আর তার রেশ কাটতে না কাটতেই বিজেপি নেতা শুভেন্দুর মুখোমুখি হয়ে গেলেন সুজন চক্রবর্তী।
বিধানসভায় দেখা। দেখাসাক্ষাতের পরেই টুকটাক কথাবার্তা, কফিতে চুমুক, কুশল বিনিময়। শুভেন্দুই ঘরে নিয়ে যান সুজন চক্রবর্তীকে। না না, এতে আলিমুদ্দিনের ভুরু কোঁচকানোর কিছু নেই। বামেরা বিধানসভায় আসনশূন্য হলেও সুজন কট্টর সিপিএম। কিন্তু শুভেন্দু অধিকারীর মধ্যে তো একটা ‘ভীষণ (বি)’ প্রবণতা আছে, তাই বিজেপি শিবির কিছুটা হলেও ভয় পেতেই পারে। এমনই মনে করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
তবে এই দেখাসাক্ষাৎ আলাপ বিনিময়কে সৌজন্য বলেই জানিয়েছেন সুজন ও শুভেন্দু। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, “রাজনৈতিক মত আলাদা হলেও সৌজন্যের চল বাংলায় চিরকালই ছিল। এখন সেই পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে”। এই নষ্ট প্রসঙ্গে তিনি পরোক্ষে তৃণমূলকে কটাক্ষ করলেও তৃণমূল তা মানতে নারাজ। তৃণমূল নেতা তাপস রায়ের বক্তব্য, “বাংলায় সৌজন্য ছিল এবং তাকে আলাদা মর্যাদার সাথে রক্ষা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপিই বরং গোটা পরিবেশ কলুষিত করেছে”।
তবে এই বাঘে-গোরুতে এক ঘাটে জল খাওয়ার বিবাদটা বেশিদূর গড়ায়নি। সামাল দিয়েছেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। কেননা সংবাদ সূত্রে জানা গেছে, সুজনকে বিমানবাবুও নিজের ঘরে ডেকে নিয়ে গেছিলেন।
‘যদি হয় সুজন, তবে তেঁতুল পাতায় নজন’। এই ঘটনা সেই পুরোনো প্রবাদটাকেই আরো একবার মনে করিয়ে দিল।