গত সোমবার নবনির্মিত ‘কাশী বিশ্বনাথ করিডোর’ উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই ধারাতেই দেশব্যাপী ‘দিব্য কাশী, ভব্য কাশী’ নামে কর্মসুচির ঘোষণা করেছে বিজেপি। আর ঠিক সেই সময়েই কংগ্রেসের সভামঞ্চে ধারালো শব্দ নিয়ে হাজির হলেন সনিয়া পুত্র রাহুল গান্ধী। বোঝাতে চাইলেন হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদীদের মধ্যে তফাৎ কোথায়।
এদিন জয়পুরে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে কংগ্রেসের সভায় দাঁড়িয়ে হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদীদের তফাৎ বোঝাতে মহাত্মা গান্ধী ও নাথুরাম গডসের প্রসঙ্গ তুলে আনেন। তিনি বলেন, “হিন্দু ও হিন্দুত্বের ফারাক আমি আপনাদের বোঝাতে চাই। হিন্দু সত্যের জন্য প্রাণ দেয়। মহাত্মা গান্ধী ছিলেন হিন্দু, সারা জীবন তিনি সত্যের খোঁজ করেছেন। গডসে হিন্দুত্ববাদী, তিনটি গুলি করেছিলেন মহাত্মাকে। হিন্দুত্ববাদীদের সঙ্গে সত্যের কোনও সম্পর্ক নেই। হিংসাই তাদের কাছে শেষ কথা,কেননা তারা ভয়ে ভয়ে বাঁচে।”
উল্লেখ্য, কংগ্রেসের প্রাক্তন মন্ত্রী সলমন খুরশিদ তাঁর “Sunrise Over Ayodhya Nationhood in our times” বইতে হিন্দু ও হিন্দুত্ববাদের তফাৎ বোঝাতে গিয়ে উল্লেখ করেছিলেন, ‘উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের সাথে বোকো হারাম বা আইসিস-এর মতো জঙ্গি সংগঠনগুলোর আদতে কোনও তফাৎ নেই।’ যা নিয়ে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়। এদিন সনিয়া পুত্র রাহুল গান্ধীর বক্তৃতার মধ্যেও প্রায় এক সুর শোনা যায়।
উত্তর প্রদেশে নির্বাচনের ঠিক আগে বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রীর ‘কাশী বিশ্বনাথ করিডোর’ প্রকল্পের উদ্বোধন যে একরকম ধর্মীয় আবেগ দিয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা, অনেকেই এমন মনে করছেন। ঠিক সেই সময়েই বিজেপির ‘হিন্দুত্ববাদের’ সমালোচনা করে সাংসদ রাহুল গান্ধী সেই জল্পনাই খানিকটা উস্কে দিলেন। যদিও ২০১৯ এর নির্বাচনের সময় রাহুলও নিজেকে ‘শিবভক্ত’ বলে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন। তবুও একটা সূক্ষ্ম পার্থক্য করতে চান রাহুল গান্ধী।
বরাবরই প্রশ্ন তুলে আসছেন কংগ্রেস সাংসদ রাহুল, এদিনের সভাতেও প্রশ্ন তুললেন,”আপনি যদি হিন্দু হন তাহলে হিন্দুত্বের প্রয়োজন হব কেন? আলাদা করে নামের দরকারটা কী? শিখ বা মুসলিমদের মারধোরের কথা কি হিন্দু ধর্মে বলে? হিন্দুত্ব তাই বলে। কোন ধর্মে হিন্দুত্ব লেখা আছে?”
‘হিন্দু’ বলে আলাদা করে জাহির করাটাকেই কি ‘হিন্দুত্ববাদ’ বলে তফাৎ করতে চাইলেন রাহুল গান্ধী! সেটাই মনে করছে বিদগ্ধ মহল।