পরিবেশের অন্যান্য প্রাণীদের প্রতি ভালোবাসা বিভিন্ন রূপে প্রকাশ পেয়ে থাকে। অনেকেই সেই ভালোবাসা থেকে নিজের শরীরে বিভিন্ন পাখি, সাপ, প্রজাপতি, বাঘ কিংবা বৃশ্চিকের ট্যাটু আঁকিয়ে নেন। মনস্তত্ত্ব আরো একটু ঘাঁটলে জানা যায় প্রত্যেক মানুষই অবচেতন মনে প্রিয় কোনও প্রাণীর মতো হতে চান, একাত্মতা অনুভব করেন। তাই বলে লক্ষ টাকা খরচ করে একেবারে সেই প্রাণীতেই রূপান্তরিত হওয়া! এটা সত্যিই ভাবনার বাইরে। কিন্তু জাপানের এক ব্যক্তি ঠিক এমন কান্ডই ঘটালেন।
সম্প্রতি টোকো স্যান নামের এক ব্যক্তির ভিডিও ট্যুইটার মারফত ভাইরাল হয়েছে। সেখানে ভিডিও এবং ছবি প্রকাশ থেকে জানা গিয়েছে ‘কোলি’ নামক ব্রিডের এই কুকুর আদতে এক মানুষ, এবং সেটা টোকো স্যান নিজেই।
টোকো স্যান জানাচ্ছেন, “আমি অনেক আগে থেকেই চারপেয়ে প্রাণীদের ভালোবাসতাম। তার মধ্যে কুকুর ছিল আমার সবচেয়ে প্রিয়। তাই এদের সাথে মিশে গিয়ে নিজের স্বপ্নকে সত্যি করার লোভটা শেষপর্যন্ত আর সামলাতে পারলাম না।”
এতক্ষণে আপনি হয়তো ভাবছেন লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে বিশেষ অস্ত্রোপচার বা জিনগত প্রযুক্তির মাধ্যমে এই ব্যক্তি কুকুরে পরিণত হয়েছেন! মোটেই তা নয়।
জেনেটিক প্রযুক্তি অনেকটা অগ্রসর হলেও, অতখানি এখনও পর্যন্ত হয়নি। বিশাল অঙ্কের টাকা খরচ করেছেন ঠিকই। সংখ্যাটা ২ মিলিয়ন ইয়ান অর্থাৎ প্রায় ১৩ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। তবে সেটা এই কুকুরের মতো হুবহু দেখতে বিশেষ একপ্রকার কস্টিউম তৈরির জন্য।
জাপানের সংবাদমাধ্যম ‘মাইন্যাভি’-র এক রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে টোকো স্যান বিশাল টাকা ব্যয় করে একটি বিশেষ কস্টিউম তৈরি করিয়েছেন। ‘জেপেত’ নামক সিনেমার পোশাক নির্মাণকারী সংস্থা টোকোর এই কস্টিউমটি তৈরি করেছে। এই কস্টিউম তৈরি করতে সময় লেগেছে ৪০ দিন।
টোকো স্যান বলেন, “বিশেষ কিছু বাধা পেলেও এই পোশাকে আবৃত থেকে মোটামুটি নড়াচড়া যায়। তবে অতিরিক্ত লাফালাফি করলে এই কস্টিউমের মধ্যে আমাকে আর কুকুরের মতো লাগবে না।”
সেই লাফালাফিটা করে দেখিয়েছেন টোকো স্যান। নাহলে কিছুতেই ধরা সম্ভব হতনা ইনি কুকুর নন, আসলে একজন মানুষ। আর্থার কোনান ডয়েলের শার্লক হোমসের গল্পে, বাংলায় আশাপূর্ণা দেবীর গল্পে এই পোশাকের আইডিয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়। সেটাই বাস্তবায়িত করে দেখালেন টোকো স্যান।