শনিবার হনুমান জয়ন্তীর মিছিল ঘিরে দাঙ্গা হাঙ্গামার পর বেআইনি দোকান উচ্ছেদের নাম করে ব্যাপক হিংসাত্মক অভিযান চালানো হয়। তবে এর পেছনে আসল উদ্দেশ্য ধর্মীয় প্রতিহিংসার আগুন, বাস্তবে তেমন তথ্যই সামনে আসতে শুরু করেছে।
জাহাঙ্গিরপুরীতে শোভাযাত্রায় দাঙ্গার পেছনে হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ই পরস্পরের দিকে আঙুল তুলেছে। একদিকে যেমন মুসলিম মহল্লা থেকে মিছিলে পাথর ছোঁড়ার অভিযোগ, উল্টোদিকে তেমনই মহল্লায় ঢুকে মুসলিমদের জোর করে ‘রাম নাম’ বলতে বাধ্য করার অভিযোগও তোলা হয়েছে। দোষী কে তা এককথায় নির্ধারণ করা মুশকিল, তবে এই দাঙ্গার পেছনে বহিরাগতদের হাত রয়েছে স্থানীয় হিন্দু মুসলিম উভয় প্রত্যক্ষদর্শীই সেদিকে ইঙ্গিত করেছেন।
আর এরপরেই বিজেপি পরিচালিত উত্তর দিল্লী মিউনিসিপ্যালিটি থেকে বুলডোজার এনে জাহাঙ্গিরপুরীর বেশকিছু অস্থায়ী দোকানপাট ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
এই অভিযানের কারণ হিসেবে বেআইনি দোকান উচ্ছেদের কথা বলা হলেও, প্রকৃতপক্ষে হিন্দুদের ধর্মীয় প্রতিহিংসা ফলাতেই এই বুলডোজার চালানো সেটাই বলছেন স্থানীয় মানুষজন। এলাকার মুসলিমদের দাবি, বেছে বেছে তাদেরই দোকানগুলি টার্গেট করা হয়েছে।
বাস্তবিক এই প্রতিহিংস অভিযান সম্পূর্ণ বেআইনিভাবেই চালানো হয়েছে।
এই এলাকায় উচ্ছেদ নিষিদ্ধ করতে সুপ্রিমকোর্ট আদেশনামা জারি করলেও, সেই আদেশ কার্যত অগ্রাহ্য করে দোকান উচ্ছেদ চালানো হয়। সম্পূর্ণ বিনা নোটিশে টানা একঘন্টা ধরে বুলডোজার চালিয়ে শুধু দোকানপাট ভাঙাই নয়, মুসলিম মহল্লার কিছু ঘরবাড়িও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে স্থানীয় মুসলিমদের দাবি। রমজান মাসে রোজা চলাকালীন তাদের রুজিরোজগার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙা বাড়ির ধুলো হাতড়ে হারানো জিনিস খুঁজে বেড়ানোর মর্মস্পর্শী দৃশ্যের ছবি ধরা পড়েছে। ৩২ বছরের প্রাচীন বাসিন্দা সাবিনা বেগম সক্ষোভে বলেছেন, “অপকর্ম করে বাইরের লোকেরা। আর আমরা তার খেসারত দিয়ে মরছি!”
উত্তর দিল্লী মিউনিসিপ্যালিটির এই নিষ্ঠুর পদক্ষেপ চূড়ান্ত ধর্মীয় হিংসার নজিরবিহীন ঘটনা রূপেই প্রতিপন্ন হয়েছে –যারা শীর্ষ আদালতকেও অবমাননা করতে পারে!