প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে পদ্মভূষণ সম্মানের জন্য নির্বাচন! কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ‘কাঁঠালের আমসত্ত্ব’ বলেই ভ্রম মনে হয়। বলা বাহুল্য, বামনেতা ও প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য এই পুরস্কার নিতে অস্বীকার করেছেন। তা না করলে কমিউনিস্টের প্রেস্টিজ ইস্যু হয়ে যেত। তবে এই অস্বীকারকে মোটেই ভালো চোখে দেখেনি বিজেপি। রাজ্যের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ এর প্রতিক্রিয়া আগেই দিয়েছেন। এবার গোটা ঘটনাকেই ‘ভোট রাজনীতির কৌশল’ বলে আখ্যা দিলেন তৃণমূলের রাজ্যসম্পাদক কুনাল ঘোষ।
বরাবরের বিরোধী অবস্থানে বক্তব্য রেখে চলা ‘কমিউনিস্ট’ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য খবর পাওয়ামাত্রই কেন্দ্রের দেওয়া ‘পদ্মভূষণ’ প্রত্যাখ্যান করেন। এর প্রতিক্রিয়ায় দিলীপ ঘোষ বলেন, “বুদ্ধবাবু পদ্মভূষণ নাও নিতে পারেন। সেটা ওনার ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে কমিউনিস্টরা চিরদিন দেশের পরম্পরা ও সংস্কৃতিকে অপমান করে এসেছে।”
উল্লেখ্য, এই বছর পদ্মভূষণ প্রাপক হিসেবে চলচ্চিত্র অভিনেতা ভিক্টর বন্দ্যোপাধ্যায়, গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবী আজাদ সহ অনেকেরই নাম ঘোষিত হয়েছে। তবে বামনেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নাম সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিতই ছিল। তাঁকে পদ্মভূষণ দিয়ে কি নিজেদের নিরপেক্ষ ভাবমূর্তি প্রমাণ করতে চাইল বিজেপি? এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপত্রে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
ব্যাপারটাকে ‘রাম-বাম ঘোঁট’ আখ্যা দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “যে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের জমি আন্দোলনে বুদ্ধবাবুর হাত রক্তাক্ত হয়েছিল, সেই মুখ্যমন্ত্রীকে বিজেপি সরকারের সম্মান জানানোর অর্থ হল জমি আন্দোলনের বিরুদ্ধে সরকারি নিষ্পেষণকেই স্বীকৃতি দেওয়া।” এছাড়াও লালকৃষ্ণ আদবানির সাথে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সুসম্পর্কের প্রসঙ্গও তোলা হয়।
পাশাপাশি নিজের মতামত দিয়ে তৃণমূলের রাজ্যসম্পাদক কুনাল ঘোষ বলেছেন, “বুদ্ধদেববাবু এমন কিছু কাজ করেননি যে পদ্মভূষণ পাবেন। যে বিজেপি মুখে সিঙ্গুর নন্দীগ্রামের বিরোধিতা করেছে, সেই বিজেপিই যখন তার নায়ক বুদ্ধবাবুকে পদ্মভূষণ দেয়, তখন তার একমাত্র কারণ বামপন্থীদের ভোটব্যাঙ্কের কাছে ঘুরিয়ে ভোট ভিক্ষা করা। দিল্লীর বিজেপি নেতারা বামেদের বার্তা দিচ্ছেন আমরা তোমাদের বন্ধু।”