শরীর চর্চার কোনও বিকল্প নেই। তবে প্রতিদিনকার ব্যস্ত জীবনযাত্রায় এই দিকটাই অবহেলিত হয় সবচেয়ে বেশি। বিশেষত যাঁরা রুটিন মেনে চলতে তেমন অভ্যস্ত নন, তাঁদের কাছে জিমে যাওয়া অথবা নিয়ম করে রোজ সকালে খালি হাতে ব্যয়াম অকেশনাল হয়েই দাঁড়ায়। তার ওপর রয়েছে অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস! ফলে মেদবৃদ্ধি, আর মেদজনিত হাজারো রোগ বাসা বাঁধতে থাকে শরীরে।
উল্টোদিকে, এই সমস্যার রাতারাতি সুরাহা খুঁজতে অনেকেই খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেন, অথবা যথেচ্ছ এক্সারসাইজ শুরু করে দেন, যা একেবারেই করা উচিত নয়। মনে রাখা দরকার ‘ডায়েট’ নির্ভর করে পরিমিতির ওপর, কম বা বেশির ওপর নয়।
তাহলে কী উপায়ে নিয়মিত শরীরচর্চা ছাড়া এবং খাদ্যাভ্যাসের দ্বারা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়! রইল কয়েকটি অনায়াসসাধ্য উপায়, যেগুলি মেনে চললে খুব সহজেই নিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন।
প্রথমত, সঠিক খাবার সঠিক সময়ে খান। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একজন পরিণত বয়স্ক মানুষের ২৪ ঘন্টায় চার থেকে পাঁচবার খাদ্যগ্রহণ করা উচিত। সুতরাং ২-৩ঘন্টা অন্তর অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়া উচিত। এতে পরিপাক সঠিকভাবে হয়, একটা ব্যালান্স বজায় থাকে।
এরপরেই যেটা আবশ্যিক তা হলো স্বাভাবিক ঘুম। স্বাস্থ্যবিজ্ঞান বলছে ঠিকমতো ঘুমের অভাবে ‘বডি মাস ইন্ডেক্স (BMI) বৃদ্ধি পেতে পারে। আর এখান থেকে ওজন বৃদ্ধি অবধারিত। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে অন্তত ৬ ঘন্টা ঘুম অত্যন্ত জরুরি।
শরীরের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যও ভীষণ জরুরি একটি বিষয়। অতিরিক্ত স্ট্রেস থেকে ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। কেননা অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে উল্টোপাল্টা খাওয়ার প্রবণতাও অজান্তেই তৈরি হয়, প্রভাব পড়ে পরিপাক প্রক্রিয়ায়। সুতরাং অবহেলা না করে মানসিক চাপ কমাতে সাইকিয়াট্রিস্টের শরনাপন্ন হোন।
বিভিন্ন প্রসেস়ড খাবার এড়ানোর চেষ্টা করুন। বিশেষ করে ‘প্রিজারভেটিভ’ অর্থাৎ যা বহুদিন রেখে খাওয়া যায়, এই ধরনের খাবার ওজন বৃদ্ধির মূল।
শরীরচর্চা নিয়মিত যদি নাও করেন, দৈনন্দিন কাজের মধ্যেই তার খানিকটা পুষিয়ে নেওয়া যায়। কম দূরত্বে কোথাও যাওয়ার থাকলে গাড়িতা না চড়ে হাঁটুন। এসকালেটর কিংবা লিফ্ট এড়িয়ে চেষ্টা করুন সিঁড়ি ভেঙে ওঠবার। যদি আপনার বসা কাজ হয়। তবে আধঘন্টা অন্তর একটু উঠে পায়চারি করে নিতে পারেন। এই অভ্যাসগুলি আপাতদৃষ্টিতে তুচ্ছ মনে হলেও বাড়তি মেদ ও মেদজনিত অসুখ নিয়ন্ত্রণে অত্যন্ত কার্যকরী।