গত বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত প্রশাসনিক সভায় সরকারি দপ্তরের উদ্দেশ্যে কড়া নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন সরাসরি পূর্ব মেদিনীপুরের এসপিকে সম্বোধন করে বলেন, “এসপি কোথায়? লুকিয়ে আছে? তোমার জেলা নিয়ে অভিযোগ পাচ্ছি। কাউকে কাউকে সাজিয়ে পরিকল্পিতভাবে হিংসা বাধানোর চেষ্টা হচ্ছে।”
রাজ্যের জনস্বার্থমূলক প্রকল্প সুষ্ঠুভাবে এদিন নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত করার লক্ষ্যে আইএএস ও আইপিএস অফিসারদের নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল। এই বৈঠকে রাজ্যের সমস্ত জেলার পুলিশ সুপার ও জেলাশাসকরা হাজির ছিলেন। আলোচনার সূত্র ধরেই পূর্ব মেদিনীপুরের এসপিকে লক্ষ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “অনেকদিন ধরে বলেছি, কিছু করোনি। আমাকে হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে।”
এসপিকে উদ্দেশ্য করে এই বক্তব্যে তিনি অন্যান্য প্রভাবশালীর কর্তৃত্ব এবং রাজ্যপালের প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এসপিকে বলে, “কোনো কোনো রাজনৈতিক নেতা ইন্ধন দেয় তাই হিংসার ঘটনা ঘটে। কাজ করতে ভয় লাগছে? তোমাকে রাজ্যপাল কি ফোন করেন? রাজ্যপাল কি বলেছেন এটা করবেনা ওটা করবেনা? এরকম হলেও তুমি বলবে না, তুমি কিন্তু রাজ্যসরকারের। তুমি তোমার মতো কাজ করবে।”
পূর্ব মেদিনীপুরের একজন এসপিকে সরাসরি বললেও আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে সকল প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যেই কথাগুলি বলছিলেন, তা বেশ বোঝা যায়। এক শীতল কঠোর নির্দেশ, “তুমি তোমার মতো কাজ করবে। ভালো কাজ করবে বলেই তোমায় ওখানে দিয়েছিলাম। হলদিয়ায় অভিযোগ পেলাম, বাধ্য হয়ে দুজনকে গ্রেপ্তার করে সরাতে হয়েছে। ওরা এক্সাইড, ধানুকা ইন্ডাস্ট্রির কাজে অসুবিধা সৃষ্টি করছিল। কাজ করতে অসুবিধা মনে হলে আমাকে সরাসরি জানাও! কেউ বলল, এটা কোরোনা ওটা কোরোনা– সেসব শুনবেনা।”
মমতার আরো সংযোজন, “নিজের দপ্তরের কাজের খেয়াল রাখতে হবে। শুধু পয়সা দিলাম আর মেলা করালাম, সেটা চলবেনা। উপরতলার কর্মীরা নিচেরতলার কর্মীদের দিকে দায় ছেড়ে দেন, এগুলো অবহেলার পরিচয়। সরকারি কাজে কোনরকম গাফিলতি বরদাস্ত করা চলবেনা।” স্পষ্টতই নির্দেশ দিলেন মমতা।