হাঁসখালিতে নাবালিকা মেয়েটির ধর্ষণ ও মৃত্যু ঘিরে বর্তমানে গোটা রাজ্য তোলপাড়। বগটুই অগ্নিকান্ডের রেশ মিটতে না মিটতেই এসে পড়ল আবারো এক মর্মান্তিক ঘটনা, এবারেও অভিযোগের আঙুল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলের দিকে। এই অভিযোগের প্রত্যুত্তরে ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কিছু প্রশ্ন তুলেছেন, যা নিয়ে বিতর্কের ঘোলা জল গত দুইদিনে আরো খানিকটা ঘোলা হয়েছে।
নিজের বিবৃতিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথমেই দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “ঘটনাটা খারাপ। ছেলেটি অ্যারেস্ট হয়েছে। তবে মেয়েটার সঙ্গে ছেলেটার লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল বলে আমি শুনেছি।”
ঘটনাচক্রে কোনো একটি বিশেষ অপরাধে তৃণমূলের প্রতিনিধির ছেলে যুক্ত বলেই তৃণমূল কংগ্রেস দলটিকে কেন দোষারোপ করা হবে? এই প্রশ্ন তুলে দলীয় ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখার চেষ্টা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বগটুই কান্ডের মতো এই ক্ষেত্রেও মমতার অবস্থান স্পষ্ট –‘স্টেপ নেওয়ার সময় কালার বিচার করা হয়নি’ একথা তিনি জোরের সাথেই দাবি করেছেন।
উল্টোদিকে মেয়েটির পরিবারের উদ্দেশ্যে তিনি প্রশ্ন রাখেন, “মেয়েটি মারা গেছে ৫ তারিখে। পুলিশ জেনেছে ১০ তারিখে! মৃত্যুতে যদি কোনও অভিযোগ থাকে তাহলে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেননা কেন? দেহটাকে পুড়িয়ে দিলেন! প্রমাণ যোগাড় করবে কোত্থেকে? সত্যিই ধর্ষণ হয়েছে না প্রেগন্যান্ট ছিল? নাকি কেউ ধরে দুটো চড় মেরেছে, শরীরটা খারাপ হয়েছে?”
বাস্তবিকই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এহেন মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছে রাজ্যে। সেটাই স্বাভাবিক। তবে মুখ্যমন্ত্রীর কথার ভাষা যে ‘ফিল্টার দ্বারা পিউরিফায়েড’ নয় একথা শুরু থেকেই পশ্চিমবঙ্গবাসী জানেন। তাই কথার ধরণ নিয়ে সমালোচনা চলতেই পারে। কিন্তু প্রশ্ন হলো সাক্ষ্যপ্রমাণ-তদন্ত সঠিক পথে এগোচ্ছে কিনা!
তৃণমূল নেতা ব্রজগোপাল গয়ালির পুত্র অভিযুক্ত সোহেল গয়ালি এই মূহুর্তে বাইরে ছাড়া নেই। সে এখন পুলিশি হেপাজতে। তবে মেয়েটির মৃতদেহ কেন তড়িঘড়ি জ্বালিয়ে ফেলা হল, এই জায়গাটা অন্ধকারেই থেকে যাচ্ছে। খবর খুঁড়ে সত্যানুসন্ধানের চেষ্টাই এখন করা যেতে পারে।