বিকারগ্রস্ততা নাকি পরিকল্পিত সন্ত্রাস? সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষনাথ মন্দিরে কাটারি হাতে হামলাকারী মোর্তাজা আহমেদ আব্বাসিকে নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। গোরক্ষপুরের সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান, উচ্চশিক্ষিত, পেশায় কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারের কেন এই অধঃপতন! পারিবারিক তরফে দাবি করা হয়েছে তিনি মানসিক বিকারগ্রস্ত। অথচ মোর্তাজার আচরণে একজন সন্ত্রাসীর লক্ষণ স্পষ্ট প্রকাশ পেয়েছে।
গোরক্ষপুরের গোরক্ষনাথ মন্দিরে খোদ মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ যোগীই প্রধান পুরোহিত ছিলেন। সেই মন্দিরকেই হামলা করার টার্গেট নিয়েছিল কেন ২৯ বছর বয়সী দিব্যি সুস্থ সবল দেখতে ওই যুবক? বিষয়টিকে মোটেই হাল্কাভাবে দেখতে রাজি নয় উত্তরপ্রদেশের প্রশাসন। এই ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড। স্কোয়াডের তরফ থেকে বল হয়েছে এই ঘটনা “বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অঙ্গ হতে পারে। অথবা পরোক্ষে এটাই সন্ত্রাসবাদ।”
২০১৫ সালে মুম্বই আইআইটি থেকে পাশ করে কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার হন মোর্তাজা আহমেদ আব্বাসি। দুটি বড় প্রতিষ্ঠান, Reliance Industries এবং ESSAR petro chemicals-এ চাকরিও করেছেন। পরিবারসূত্রে জানা যাচ্ছে ২০১৭ সাল থেকে মানসিকভাবে তিনি সুস্থ ছিলেননা।
গত রবিবার বিকেলের পর আচমকাই হাতে কাটারি নিয়ে গোরক্ষনাথ মন্দির লক্ষ্য করে তেড়ে আসেন এই যুবক। উচ্চস্বরে “আল্লাহু আকবর!” ধ্বনি দিতে দিতে মন্দিরে মারমুখী হয়ে ছুটে আসতে দেখে হতবাক বনে যান মন্দিরের দেহরক্ষীরা। ক্ষিপ্ত এবং সশস্ত্র ওই যুবককে আয়ত্তে আনতে বাধ্য হয়ে ইট পাটকেল ছোঁড়া হতে থাকে। উল্টোদিকে থেকে যুবক মোর্তাজাও ইঁট ছুঁড়ে প্রতিআক্রমণ করতে থাকে।
শেষে অনেকের মিলিত চেষ্টায় এই সশস্ত্র যুবককে ধরে ফেলা হয়। উল্লেখ্য, এই ঘটনায় দুই কনস্টেবল জখম হয়েছেন। আহত হয় ওই যুবকও। কিন্তু কেন হঠাৎ অস্ত্র হাতে মন্দিরে হামলা করতে গেল সে?
উত্তরে মিলছে গন্ডগোল। জেরার মুখে পড়ে মোর্তাজা জানায়, “আমি আল্লাহর জন্য প্রাণ দিতে চাই।” এ কেমন উদ্ভট ও উগ্রবাদী মনোভাব? প্রশ্ন উঠছে সেখানেই। একাংশের মতে ‘সন্ত্রাসবাদ’ কি একধরনের মানসিক বিকৃতিই নয়? যদি তাই হয় তবে মোর্তাজা আহমেদ নিশ্চয়ই সন্ত্রাসবাদী। হয়তো সংগঠিত ভাবে নয়, বিক্ষিপ্তরূপে নিজের মধ্যেই সন্ত্রাসের বীজ বুনে উগ্রপন্থী হয়ে উঠেছে এক ২৯ বছরের যুবক!
আপাতত বিষয়টি নিয়ে গভীর তদন্ত চালাচ্ছে অ্যান্টি টেররিস্ট স্কোয়াড। পাশাপাশি কাউন্সেলিং চলছে আব্বাসির। প্রেম, বিয়ে ভেঙে যাওয়া, ইউটিউবে হিংসাত্মক ভিডিওর প্রভাব ইত্যাদি নানা তথ্য এই যুবকটি সম্পর্কে উঠে আসছে।