রাজ্যে দৈনন্দিন জীবনযাপনে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার ঘোষণায় প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ মতপ্রকাশ করেছেন, তৃণমূল সরকার ইচ্ছেমতো বিধি নিষেধ জারি করেছে, এই নিষেধাজ্ঞা জারি কতটা যথেষ্ট সেসম্পর্কে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন তিনি। আজ তারই পাল্টা জবাব দিতে গিয়ে দিলীপ ঘোষের মতামতকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক উড়িয়ে দিয়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
বিগত ২ বছরের লকডাউন ও কড়া নিষেধাজ্ঞার ফলে ভেঙে পড়া অর্থনীতি যখন সবে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, ঠিক সেই সময়েই আবারো করোনা সংক্রমণের বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে বাধ্য হয়েই দৈনন্দিন জীবনযাত্রার কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে নিষেধ জারি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং লকডাউনের বিপক্ষে, সেখানে রাজ্যের বিজেপি নেতা দিলীপ ঘোষ কি আরো কড়া বিধিনিষেধ চাইছেন?
রুজিরোজগার হারিয়ে নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে যাওয়াটাই কি দিলীপ ঘোষের কাম্য? সচেতন মহল তাঁর এই আলটপকা মন্তব্যে সংশয়ের ছায়া দেখছেন।
সংবাদ মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে এদিন দিলীপ ঘোষ বলেন, “সরকার তার নিজের মতো বিধিনিষেধ জারি করেছে। এটাও ঠিক যে অর্থনীতি বাঁচিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু অর্থনীতি বাঁচাতে গিয়ে যদি সংক্রমণ বেড়ে যায়, তাহলে চিন্তার বিষয়। আমার মনে হয় যাঁরা বিশেষজ্ঞ তাঁদের মত নিয়ে কাজ করা উচিত।”
‘বিশেষজ্ঞ’ বলতে কাদের কথা ইঙ্গিত করেছেন দিলীপ ঘোষ? প্রশ্নটা উঠেছে এখানেই। প্রসঙ্গত, রাজ্যের বিধিনিষেধ ঘোষণার আগেই দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছেন, “ভারত সবরকম সাবধানতা বজায় রেখে, সবরকম সতর্কতার সাথে করোনার সঙ্গে লড়বে এবং নিজের জাতীয় স্বার্থও পূর্ণ করবে।”
প্রধানমন্ত্রী বিগত দুই বছরের সার্বিক অর্থনীতির ক্ষতির কথা মাথায় রেখেই এই মতামত প্রকাশ করেছেন, যেটা ইতিমধ্যেই অধিকাংশ দেশবাসী জেনেছেন। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে লকডাউন কিংবা আরো কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করতে গেলে সংক্রমণ কতদূর কমবে তার নিশ্চয়তা নেই, তবে নিম্নমধ্যবিত্ত ও রোজগেরে দিনমজুরেরা না খেতে পেয়ে মরবেন এই সমীকরণ একটা শিশুকে বোঝালেও বুঝবে।
কিছুটা এই মনোভাব প্রকাশ করেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের উত্তর দিয়েছেন। তিনি সপাটে বলেছেন,”রাজ্যসরকার বিরোধীদের কথায় চলবেনা। মানুষের রুটিরুজির দিকে খেয়াল রাখাও সরকারের দায়িত্ব।”
এবিষয়ে পাল্টা কোনও প্রতিক্রিয়া দিলীপ ঘোষের দিক থেকে এখনও মেলেনি। নিজের দ্বিধাজড়িত মন্তব্যের এই উত্তর পেয়ে আপাতত তিনি চুপ করে গেছেন, বিশেষজ্ঞরা তাই মনে করছেন।